‘হুমকির মুখে’ মেয়ের মৃত্যুর পর বাড়ি ছাড়লেন সাংবাদিক
এক সপ্তাহ আগেই গত মঙ্গলবার নিজের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুমিত্রা মৃধাকে হারিয়েছেন সাংবাদিক অরবিন্দ কুমার মৃধা। তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি অন্য কোনোভাবে সে মারা গেছে এ ব্যাপারটি এখনো পরিষ্কার হয়নি।
অরবিন্দ অভিযোগ করেছেন, এরই মধ্যে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর নিরাপত্তার কারণে তিনি এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
বিষয়টি সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন দৈনিক সংবাদের শ্যামনগর প্রতিনিধি অরবিন্দ কুমার মৃধা। জিডিতে তিনি নিজের ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি শ্যামনগরের বাদোঘাটা গ্রামের নিজ বাড়িতে অরবিন্দের মেয়ে সুমিত্রা মৃধাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। মঙ্গলবার রাত ৮টার পর সুমিত্রাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা সুমিত্রাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সুমিত্রার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্যামনগর মহসীন ডিগ্রি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত সুমিত্রা। সুমিত্রার মা শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ সেবিকা।
ওই ঘটনা পর শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক আমিনুর রহমান জানান, সুমিত্রার দেহে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার করা জিডিতে অরবিন্দ কুমার মৃধা জানান, তাঁর মেয়েকে হত্যার পরপরই তাঁর চার প্রতিবেশী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। সাতদিন পার না হতেই তারা নিজ বাড়িতে ফিরে এসে তাঁকে (অরবিন্দ) হুমকি দিতে শুরু করেছে। পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা আবারও বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কায় অরবিন্দ মৃধা শ্যামনগরের বাদোঘাটা গ্রামের বাড়ি ছেড়ে অন্য এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ জানান, গত ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সুমিত্রা বাসায় একাই ছিল। তিনি যশোরে ছিলেন। স্ত্রী সবিতা হাসপাতালে ব্যস্ত ছিলেন। শিশু ছেলে অনুব্রত মৃধা প্রাইভেট পড়ে বাড়িতে ফিরে এসে তার বোনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সবাইকে খবর দেয়। এ সময় বাড়ির বিদ্যুৎও বিচ্ছিন্ন ছিল।
অরবিন্দ মৃধা জানান, তাঁর প্রতিবেশী পরিতোষ কুমার মণ্ডল ওরফে জটা, শ্যামল কুমার মণ্ডল, তপন কুমার মণ্ডল ও আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও তারা তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুন জখম করে বিতাড়িত করবে বলে হুমকি দিয়েছিল। ১৯ জানুয়ারি রাতে তাঁর মেয়ে হত্যার পর থেকে পালিয়ে যায় ওই প্রতিবেশী চারজন। এবার তারা নিজ বাড়িতে ফিরে এসে নতুন করে হুমকি দিতে শুরু করেছে।