অভিযোগ গঠনের দিনই সাজা
কিশোরগঞ্জে সুড়ঙ্গ কেটে সোনালী ব্যাংকের ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা চুরির দায়ে মামলার প্রধান আসামি সোহেল রানাকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো পাঁচ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ গঠনের নির্ধারিত তারিখে আসামি সোহেল রানা আজ মঙ্গলবার বিকেলে অভিযোগ স্বীকার করায় জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হামিদুল ইসলাম এই রায় দেন। সেই সঙ্গে মামলার বাকি তিন আসামি সোহেল রানার ভাই ইদ্রিছ মুন্সী, স্ত্রী মাহিলা আক্তার হীমা এবং মামাশ্বশুর সিরাজ উদ্দিন ভূঞার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন বিচারক।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোহেল রানা ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সুড়ঙ্গ কেটে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের কিশোরগঞ্জ শাখা থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যান। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে পাশের মরহুম আমিনুল হকের বাড়ির একটি কক্ষের ভেতর আনুমানিক ১৫ ফুট দীর্ঘ সুড়ঙ্গের অপর প্রান্তের সন্ধান পায়। পরে ভল্টের টাকা গণনার পর ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। টাকা চুরির মূল হোতা সোহেল ছিল ওই কক্ষের ভাড়াটিয়া। কিছুদিন পর ৩০ জানুয়ারি সোহেল রানাকে ঢাকার কদমতলী থেকে ১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮০ টাকাসহ র্যাব গ্রেপ্তার করে। পরে আরো দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আমানুল্লাহ শেখ বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
পরে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলার তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশনার আলোকে র্যাব ১৪-এর কাছে মামলার যাবতীয় কার্যক্রম হস্তান্তর করে কিশোরগঞ্জ পুলিশ। দীর্ঘ এক বছর তদন্ত শেষে র্যাবে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার রাজিব কুমার দেব আসামি সোহেল রানা, ইদ্রিছ মুন্সী, মাহিলা আক্তার হীমা ও সিরাজ উদ্দিন ভূঞার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সোহেল রানার বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার গাবুয়া গ্রামে বলে এজাহার সূত্রে জানা গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) রামেন্দ্র চন্দ্র তালুকদার ও সোনালী ব্যাংকের নিযুক্ত আইনজীবী এ বি এম লুৎফর রাশিদ রানা মামলাটি পরিচালনা করেন।