ঈশ্বরদীতে পাটকলের বাসের ধাক্কায় শ্রমিক নিহত
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় পাটকলের একটি বাসের ধাক্কায় এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের গোকুলনগরে অবস্থিত এম এম জুট ফাইবারস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নিজস্ব বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কারখানার প্রধান ফটকে আঘাত করলে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকের নাম সুমন (২৫)। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশববাড়িয়া গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে কাজ শেষে গাড়ির অপেক্ষা করতে থাকেন লালপুর এলাকার শ্রমিকরা। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে শ্রমিকবাহী একটি বাস এম এম জুট ফাইবারস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গেট পার হওয়ার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। বাসটি কারখানার গেটে ধাক্কা দিলে এতে চাপা পড়ে কারখানার শ্রমিক সুমন ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
শ্রমিকরা বলেন, কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণেই একটি তাজা প্রাণ অকালে ঝরে গেল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এম এম জুট ফাইবারস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের শ্রমিকরা জানান, প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের জন্য তিনটি গাড়ি থাকলেও একটা গাড়ি দীর্ঘদিন থেকে বিকল। বাকি যে দুটি গাড়ি আছে, তাও লক্কড়ঝক্কড় মার্কা, প্রায় সব সময় নষ্ট থাকে। কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে আগে গাড়িতে ওঠার জন্য শ্রমিকদের তাড়াহুড়া লেগে যায়।
শ্রমিকরা আরো বলেন, জাতীয় দিবসেও তাঁদের কোনো ছুটি নেই। ওই দিন কাজ না করলে মালিক হাজিরা কেটে নেন। আট ঘণ্টার পরিবর্তে এই কারখানায় ১২ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। এ ছাড়া অন্যান্য অনেক সমস্যাও রয়েছে বলে শ্রমিকরা উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
নিহত শ্রমিক সুমনের বাবা সাহেব আলী বলেন, মাত্র তিন সপ্তাহ আগে সুমন এই কারখানায় কাজ নেয়। ছেলের মৃত্যুর কথা শুনে কারখানায় ছুটে এলে মালিকপক্ষ ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলেন। বাড়িতে সুমনের ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রয়েছেন। দরকষাকষির একপর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে নগদ দেড় লাখ টাকা নিয়ে মামলা না করে তাঁরা সুমনের লাশ নিয়ে চলে আসেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এম এম জুট ফাইবারস মিলের জি এম জহুরুল ইসলাম বলেন, এটা একটা দুর্ঘটনা মাত্র।