নৌকা হারেনি, হেরেছেন ব্যক্তি
কেন্দ্র মনোনীত প্রার্থী জনগণের মনঃপূত না হওয়ায় সাতক্ষীরায় মেয়র পদে পরাজয় হয়েছে বলে দাবি করেছে পৌর আওয়ামী লীগ।
আজ রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের পৌর কমিটির সভাপতি মো. আবু সায়ীদ এ দাবি করেন। এ সময় তিনি বলেন ‘এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কিংবা নৌকা হারেনি। হেরেছেন ব্যক্তি।’
সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ছিলেন শাহাদাত হোসেন। গত ৩০ ডিসেম্বরের পৌর নির্বাচনে এখানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাসকিন আহমেদ ১৬ হাজার ৪৭০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির শেখ আজাহার হোসেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৮৭৩। ভোটে তৃতীয় হয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী নাসিম ফারুক খান মিঠু। তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৫৩২ ভোট। অপরদিকে নৌকা মার্কার প্রার্থী শাহাদাত পেয়েছেন নয় হাজার ৭২ ভোট। চার মেয়র পদপ্রার্থীর মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন।
অপরদিকে পৌর নির্বাচনে ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা আটটি ওয়ার্ডে জয়লাভ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসব তথ্য দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন শেষে সন্ধ্যায় পরাজিত প্রার্থী শাহাদাত হোসেন শহরে ককটেল ফাটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এতে দল, প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনেরও ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে। শাহাদাত আওয়ামী লীগের একজন নেতা হয়েও সরকার ও শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।’
এ সময় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র পদপ্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলামের নাম মেয়র পদের জন্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। জেলার সাত সদস্যের মেয়র মনোনয়ন কমিটির আমিও একজন সদস্য। অথচ মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পান শাহাদাত। তিনি কীভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন তা আমার জানা নেই।’
আবু সাঈদ আরো বলেন, ‘শাহাদাত হোসেন নির্বাচনে হেরে দায়-দায়িত্ব দলের নেতাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি বিএনপির নেতা-নেত্রীদের ভাষায় কথা বলছেন। পরাজিত এই প্রার্থী দলের নেতা-কর্মীদের এড়িয়ে নির্বাচনে বহিরাগত, সন্ত্রাসী এবং সমাজবিরোধীদের ব্যবহার করায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
নির্বাচনে পরাজয়ের পর গত ৩১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহাদাত হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার পরাজয়ের পেছনে দলের পৌর কমিটির সভাপতিসহ অন্য নেতারা জড়িত ছিলেন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। আমি নতুন নির্বাচন দাবি করছি।’
শাহাদাত হোসেনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘শাহাদাত হোসেন নিজ বাড়ির কেন্দ্রে সবার চেয়ে কম ভোট পেয়েছেন। তিনি জনগণের মন জয় করতে না পারায় হেরে গেছেন। দাম্ভিকতাপূর্ণ আচরণের কারণে ভোটারদের কাছে টানতে পারেননি তিনি। এ কারণে জনগণ তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভালো ফলও ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও নির্বাচিত কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।