বরগুনায় নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালট উদ্ধার

বরগুনা পৌরসভার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে নৌকা প্রতীকে সিল মারা একাধিক ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুরে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে বিদ্যালয়ের একটি ভবনের পেছনে ১৫ থেকে ২০টি ব্যালট পেপার ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এসব ব্যালট পেপার উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ হোসেন ব্যালট পেপার উদ্ধারের কথা স্বীকার করে বলেন, তিনটি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। তবে এসব ব্যালট ঠিক কোন কেন্দ্রের তা মিলিয়ে না দেখে কিছু বলা যাবে না বলে জানান তিনি।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে বরগুনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ পরাজিত হন। সেখানে জয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেন। জগ প্রতীক নিয়ে তিনি পান পাঁচ হাজার ৮৯৩ ভোট। আর কামরুল আহসান মহারাজ নৌকা প্রতীক নিয়ে পান ২ হাজার ৫২৫ ভোট।
নির্বাচনের দিন বুধবার সকাল ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজের পক্ষে একদল সন্ত্রাসী বরগুনা পৌরসভার গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করে ভোট কারচুপির চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে পুলিশ। এদিকে, ভোট দিতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাধারণ ভোটাররা। উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্র লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে আহত হন সদর থানার ওসি রিয়াজ হোসেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির ক্যামেরাম্যান এস এম সিফাতসহ অন্তত ৫০ জন।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ১০ রাউন্ড গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়তে হয়।
এরপর সকাল ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের এজেন্টদের সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম নৌকা প্রতীকের এজেন্ট অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর পল্টুকে পিস্তল দেখিয়ে গুলি করে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা। এ খবর শুনে ওই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে প্রশাসনকে অভিযুক্ত করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজ। পরে দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে এক সমাবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
এ ঘোষণা দেওয়ার পর বরগুনা সরকারি কলেজ ভোটকেন্দ্রে তাঁর দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার খবর শুনে বেশ কয়েকজন দলীয় নেতা-কর্মীসহ অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ ওই কেন্দ্রের দিকে যান। এ সময় পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছুড়লে অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজসহ সাত নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।