শ্রীপুরে ছেঁড়া-নষ্ট বই সরবরাহ, অসন্তোষ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য ছেঁড়া ও নষ্ট বই সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে স্থানীয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এসব বই শিক্ষার্থীদের নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী নতুন বছরের প্রথম দিন সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ করা হবে। এ উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিস থেকে বই সরবরাহ করা হচ্ছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকেও স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য বই সরবরাহ করা শুরু হয়েছে। তবে সরবরাহ করা এসব বইয়ের অনেকগুলোই ছেঁড়া ও নষ্ট।
নতুন বই নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসের গুদামের সামনে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ভিড় করতে দেখা গেছে। তাদের অনেককেই ছেঁড়া ও ভেজা বই হাতে নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ করতে দেখা গেছে।
বই নিতে আসা একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা জানান, ছেঁড়া ও ভেজা এসব বই তারা নিতে না চাইলেও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের নিতে বাধ্য করছে। সরবরাহ করা এসব বই যেসব শিক্ষক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেবে না, তাদের বই দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলার নগর হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে কিছু ভালো বই সরবরাহ করলেও অর্ধেকের বেশি বই দেওয়া হচ্ছে ছেঁড়া ও নষ্ট। এসব বই শিক্ষার্থীরা হতে পেলে খুশি হবে না। কিছুদিন পরই বইয়ের বাঁধাই খুলে যাবে এবং ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
স্থানীয় বারতোপা শিশু কাননের সহকারী শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন জানান, শিক্ষা অফিস থেকে যে বই তিনি পেয়েছেন, তার অর্ধেক বই ছেঁড়া, ভেজা ও নষ্ট। অনেক বইয়ের বাঁধাই আলগা হয়ে গেছে।
এ ছাড়া মা মণি একাডেমি অ্যান্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানের জন্য পাওয়া বইগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশ ছেঁড়া ও ভেজা। এসব বই শিক্ষার্থীরা হাতে পাওয়ার পর আনন্দ পাওয়ার বদলে আরো কষ্ট বেড়ে যাবে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব কোনো গুদাম নেই। তাই বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) একটি গুদামে সরবরাহের জন্য বই রাখা হয়। ওই গুদামের ফাটল ও বাতাসের আর্দ্রতাজনিত এবং দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় স্তূপ করে রাখা নিচের অংশের কয়েকটি বান্ডিলের বই নষ্ট হয়েছে। তবে যেসব স্কুলের বইয়ে ত্রুটি রয়েছে, নতুন বই এলেই সেসব স্কুলের বই বদলিয়ে দেওয়া হবে।’