গাজীপুরে নিহত ২ ‘জঙ্গির’ পরিচয় দুই দিনেও মিলেনি
গাজীপুরে গত রোববার রাতে অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধার এবং বোমা বিস্ফোরণে দুই ‘জঙ্গি’ নিহত হওয়ার ঘটনায় দুটি মামলা করেছে র্যাব। সোমবার রাতে জয়দেবপুর থানায় ওই মামলা করা হয়।
এদিকে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নিহত দুই ‘জঙ্গির’ পরিচয় পাওয়া যায়নি। এমনকি নিহতদের খোঁজে এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল, হাসপাতাল বা থানায় কেউ যায়নি। তাদের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী বলেন, র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন যোগীতলা এলাকার দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন পরিত্যক্ত একটি টিনশেড বিল্ডিংয়ে কতিপয় জঙ্গি সদস্য গোলাবারুদসহ অবস্থান করে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। এরপর রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যোগীতলা এলাকার র্যাব সদস্যরা ওই পরিত্যক্ত টিনশেড বিল্ডিং এলাকাটি ঘিরে ফেলে। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। পরে র্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে জঙ্গিদের অবস্থানে ওই পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। পরে র্যাবের সদর দপ্তর থেকে বোমা নিষ্ক্রিয় দল ঘটনাস্থলে এসে ওই বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পরে র্যাব সদস্যরা ওই পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে। এ সময় পরিত্যক্ত ভবনটির ভেতরে বোমায় ঝলসে যাওয়া ক্ষত বিক্ষত অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই জঙ্গিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া তাদের আশপাশে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, চারটি অবিস্ফোরিত বোমা, ২৯টি ডেটোনেটর, বোমা তৈরির দুই কেজি বিস্ফোরক, চারটি জেহাদি বই, কিছু মার্বেল, লোহার নাট বল্টু পড়ে ছিল। ওই রাতেই ওই সব মালামাল জব্দ করা হয়। পরে গুরুতর জখম দুজনকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পরের দিন সোমবার রাতে র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও বোমা বিস্ফোরণে নিহত হওয়ার ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে জয়দেবপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান জানান, রোববার দিবাগত রাতের ওই ঘটনায় র্যাব ১-এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) মো. সেলিম খান বাদী হয়ে সোমবার রাতে জয়দেবপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন। নিহত দুই জঙ্গির লাশ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহতদের পরিচয় না পাওয়া গেলে বুধবার বেওয়ারিশ হিসেবে তাদের লাশ দাফনের জন্য আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হবে।