সিংগাইর পৌরসভা নির্বাচন ৭ জানুয়ারি
মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে নতুন বছরের ৭ জানুয়ারি। এক রিট আবেদনের জবাবে হাইকোর্টের দেুংয়া রায়ে সোমবার সকালে নতুন এই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে হাইকোর্ট আরেক রায়ে এই পৌরসভা নির্বাচনে ছয় মাস স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। আজ ওই রায় বাতিলের কপি নির্বাচন কমিশনে আসায় নতুন তফসিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান।
নতুন তফসিল অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মেয়র পদপ্রার্থী ও ১১টায় সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীর আপিল শুনানি করা হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর। ২২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন এবং ২৩ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। নতুন এই তফসিল ঘোষণা পর থেকেই ছয় মেয়র, সাত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩৭ সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থীসহ ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জুন হাইকোর্টে সিংগাইর পৌরসভার বতর্মান মেয়র অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূঁইয়ার ছোট ভাই মো. মোস্তাক আহম্মেদ ভূঁইয়া ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণের অভিযোগে হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটে গত ২৩ জুন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সিংগাইর পৌরসভার ভোটার তালিকা প্রণয়ন কেন আইন বহির্ভূত হবে না এবং কেন নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হবে না— এ বিষয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জবাব দিতেও বলা হয়।
কিন্তু, নির্বাচন কমিশন রুলের জবাব না দিয়ে গত ২৪ নভেম্বর পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। বিষয়টি আদালত অবমাননাকর উল্লেখ করে গত ২ ডিসেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে নির্বাচনসহ সব কার্যক্রমে ছয় মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই স্থগিতাদেশ না আসায় তফসিল অনুযায়ী গত ৩ ডিসেম্বর দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে বর্তমান মেয়র বিএনপি মনোনীত অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম জয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত আবু নঈম বাশার, খেলাফতে মজলিশের মাওলানা আশরাফ আলী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) সাবেক মেয়র মীর মো. শাজাহান, স্বতন্ত্র মো. তোফাজ্জল হোসেন ও মো. হাফিজ উদ্দিন বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সিংগাইর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। একই সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেন পৌর সভার নয়টি ওয়ার্ডে সাত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩৭ সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী।
গত ৫ ডিসেম্বর প্রথম দিনে সাধারণ কাউন্সিলরদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। ওই দিন রাতেই স্থগিতাদেশের কপি নির্বাচন কমিশনে গেলে পৌর সভাটির সব নির্বাচনী কর্মক্রম বন্ধ করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর সিংগাইর পৌরসভা নির্বাচনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের চেম্বার আদালতে ৩৪৬১/২০১৫ সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল করা হয়।
গত ৭ ডিসেম্বর চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন শুনানি শেষে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি এ কে এম শহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চের আদেশটি ২১ জানুয়ারি ২০১৬ পর্যন্ত স্থগিত করেন।
সিংগাইর পৌরসভা নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান জানান, হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ বাতিলের কপি নির্বাচন কমিশনে আসায় ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এত অল্প সময়ে পৌর সভার ভোট গ্রহণসহ অন্যান্য দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্ভব নয়। এ কারণে নতুন ওই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।