অভিজিতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে এফবিআই
লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করার ব্যাপারে তাঁর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিবার চাইলে তারা হত্যার বিষয়ে তদ্ন্ত করতে প্রস্তুত।
অভিজিৎ রায় যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক ছিলেন। তাঁর বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা তদ্ন্ত করতে প্রস্তুত বলে আমাদের জানিয়েছে। আমরা বলেছি, আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’ তিনি জানান, বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল তাঁদের রমনার বাসায় আসবে। এ বিষয়ে দূতাবাস থেকে তাঁদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সঙ্গেও এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ডিবির জ্যেষ্ঠ কোনো কর্মকর্তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে গতকালই অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিয়ে মুখপাত্র জেন পিসাকি এ নিন্দা জানান। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তাঁরা সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ব্রিফিংয়ে পিসাকি বলেন, ‘এটা কেবল একজন ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, বাংলাদেশের সংবিধানে রক্ষিত মূলনীতির ওপর ও দেশটির মুক্ত, বুদ্ধিবৃত্তিক ও ধর্মীয় আলাপ-আলোচনার গর্বিত ঐতিহ্যের ওপর কাপুরুষোচিত হামলা।’
অভিজিৎ একজন সাংবাদিক, মানবতাবাদী, স্বামী ও বন্ধু ছিলেন জানিয়ে নিহত অভিজিতের পরিবার ও তাঁর বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র। ব্রিফিংয়ে ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে প্রশাসন কি কিছু জানতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। তিনি বলেন, ‘আপনি কি বিশ্বাস করেন যে এটা শুধু খুনের চেয়ে বেশি কিছু? পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে এমনটাই মনে হচ্ছে।’
এর উত্তরে পিসাকি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের কাছে খুব বেশি তথ্য নেই। এই সুনির্দিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজন হলে আমরা অবশ্যই কনস্যুলার সহায়তা দেব। এমনকি যদি তদন্তে সহায়তা চাওয়া হয় তবে তা দিতেও প্রস্তুত আছি আমরা। যেহেতু আমরা তাঁর পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানি। সে জন্যই আমি এ কথা বলছি। তবে এ ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে বলার মতো কিছু এখনো আমার কাছে নেই।’
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত কুপিয়ে হত্যা করে অভিজিৎ রায়কে। তিনি মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে। ওই ঘটনায় অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকেও জখম করে দুর্বৃত্তরা। তিনি এখন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।