বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ থেকে বহিষ্কার হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তা তাঁর নিজস্ব বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে দেওয়া অভিযোগে প্রিয়া সাহা তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু মানুষ বাংলাদেশ থেকে ডিজএপিয়ার হয়েছে বলে যে শব্দটি ব্যবহার করেছেন সেটা দিয়ে তিনি যদি নিখোঁজ বা গুম বুঝিয়ে থাকেন তাহলে সেটা অসত্য এবং নিন্দনীয়।

তবে বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৪৭ সালের পর সংখ্যালঘু মানুষ বাংলাদেশ থেকে যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে সেটা অবশ্যই বিবেচনার দাবি রাখে।

প্রিয়া সাহার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে  বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

সেই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত দাবি করেন, প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, সেটা একান্তই তাঁর নিজস্ব বক্তব্য। এর সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রানা দাশগুপ্ত।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘যদি তিনি (প্রিয়া সাহা) ডিজএপিয়ার বলতে ৪৭ বছরে হিন্দুদের মধ্যে বা খ্রিস্টানদের নিখোঁজ বা গুমের কথা বলে থাকেন তাহলে এটি সত্য নয়। তাঁর সাথে আমরা একমত নই। কিন্তু ১৯৪৭ সাল থেকে আজকের দিন পর্যন্ত যে পূর্ব বঙ্গ-পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ হলো আমরা তার স্ট্যাটিস্টিক ধরি আমরা ড. আবুল বারাকাতের শুধু ভেস্টেড প্রপার্টির (অর্পিত সম্পতি) কারণে তাঁরই এক কোটি ১৩ লক্ষ হিন্দু মিসিং হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে। এখন আপনারাই হিসাব করেন।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই সপ্তাহ আগে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিঞ্ঝুতার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে কথা বলেন। এতে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে প্রিয়া সাহা ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে (বাংলাদেশে) প্রায় ৩৭ মিলিয়ন (তিন কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ডিসঅ্যাপেয়ার (নিখোঁজ) হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনো সেখানে (বাংলাদেশে) ১৮ মিলিয়ন (এক কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু আমাদের (বাংলাদেশে) থাকতে সাহায্য করুন। আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।’

এ সময় ট্রাম্প জানতে চান, ‘কারা জমি দখল করেছে? কারা বাড়ি দখল করেছে?’ জবাবে ওই নারী বলেন, ‘মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় পলিটিক্যাল শেল্টার (রাজনৈতিক ছত্রছায়া) পায়।’