পাঠ্যপুস্তকে তাজউদ্দীনের জীবনী-অবদান অন্তর্ভুক্তির দাবি মেয়ের
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জীবনী ও অবদানের কথা সব স্তর ও শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁর বড় মেয়ে শারমিন আহমদ। মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৪তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠানে রাখা বক্তব্যে এমন দাবি জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা পরিষদ, গাজীপুর জেলা ও মহানগর কমিটি আয়োজিত ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি মো. শাহ আলম টুটুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজিম আহমদ সোহেল তাজ, গাজীপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হারিছ উদ্দিন আহমদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হাদী শামীম, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমানত হোসেন খান ও ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লস্কর এবং গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হীরা সরকার।
শারমিন আহমদ বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীনকে আলোর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এ দুজনের মধ্যে একজন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, আরেকজন তার সফল বাস্তবায়ন করেছিলেন। গত বছর তাজউদ্দীন আহমদের ট্রাস্ট ফান্ডের এক স্মরণসভায় ড. মুনতাসীর মামুন বলেছিলেন, তাজউদ্দীনকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাজউদ্দীন একে অপরের পরিপূরক। তাই প্রথম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিটি স্তরে তাদের অবদান ও জীবনী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে তাদের মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়। তিনি সবাইকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এসব আলোকিত মানুষের জীবনী পড়ার অনুরোধও জানান।
মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৪তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তাঁর বড় মেয়ে শারমিন আহমদ। ছবি : এনটিভি
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেন, দেশের ইতিহাস জানতে হলে নিজের জন্মসূত্রও জানতে হবে। জাতির পরিচয় জানতে হলে তার উৎস জানতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। যে যেখানে আছি সেখান থেকেই তার নাগরিক দায়িত্ব পালন করলে এ দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। দেশ হবে দেশের মানুষের জন্য, শাসনের জন্য নয়। এ অনুভূতি নিয়েই এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। তারা যুদ্ধ করেছিল দেশের মানুষ যাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। দেশে অন্ন-বস্ত্র আর খাবারের কোনো অভাব না থাকে, মানুষ যাতে বিনা চিকিৎসায় না মরে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সবাই শিক্ষার অধিকার পায়।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে শারমিন আহমদ এবং ছেলে সোহেল তাজ তাঁর বাবার জন্মদিনের কেক কাটেন। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
এদিকে তাজউদ্দীন আহমদের নিজ এলাকা গাজীপুরের কাপাসিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি দিনভর পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।