চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের নয়টি চুক্তি স্বাক্ষর
বিদ্যুৎ, পানিসম্পদ, সংস্কৃতি ও পর্যটন খাতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের চাল সরবরাহের লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে নয়টি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
আজ বৃহস্পতিবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের উপস্থিতিতে দুটি ঋণচুক্তিসহ এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে দুই দেশের নেতারা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি ও বাসস এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রেট হল অব দ্য পিপল বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের পশ্চিম পাশে অবস্থিত একটি সরকারি ভবন। এটি চীন সরকার ও শাসক চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আইন প্রণয়ন এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কাজে ব্যবহৃত হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চারটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এগুলো হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ কাঠামো চুক্তি, পিজিসিবি প্রকল্পের অধীনে বিদ্যুৎ গ্রিড নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের কাঠামো চুক্তি, দুই দেশের সরকারের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা চুক্তি এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা স্মারক।
এ ছাড়া চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের সঙ্গে দুটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।
এ ছাড়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চাল সহায়তার জন্য বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুই হাজার ৫০০ টন চাল সরবরাহ করবে চীন।
বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ বেশিরভাগ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার ও সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল একটি করে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এর আগে স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব দ্য পিপলে পৌঁছালে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
এ সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান এবং দুই প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ প্রতিনিধিদলের সদস্যদের একে অন্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
পরে চীনের তিন বাহিনীর সদস্যদের একটি সুসজ্জিত চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়। চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেখ হাসিনা একটি সুসজ্জিত মঞ্চ থেকে সালাম গ্রহণ করেন এবং পরে প্যারেড পরিদর্শন করেন।
এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয় এবং তোপধ্বনির মাধ্যমে অভিবাদন জানানো হয়।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগদানসহ চীনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য গত ১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দিনের সরকারি সফরে চীনে গেছেন।