গাজীপুর ও কক্সবাজারে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ২
গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে কালিয়াকৈরের সিনাবহ ও আজ মঙ্গলবার ভোররাতে টেকনাফের মহেশখালিয়াপাড়ার নৌঘাট এলাকায় এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের দাবি।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন—কালিয়াকৈরের লিয়ন ও টেকনাফ সদরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (ইউপি) আবদুল হামিদ (৪৫)। হামিদ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়াপাড়ার মৃত মোহাম্মদ হাসেমের ছেলে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন মজুমদার গাজীপুরে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় লিয়নের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, গতকাল জয়দেবপুর থানার একটি হত্যা ও মাদক মামলায় কোনাবাড়ী এলাকা থেকে পুলিশ লিয়নকে আটক করে। পরে রাতে তাঁর দেওয়া তথ্যমতে উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল লিয়নকে নিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে কালিয়াকৈরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়।
অভিযানের একপর্যায়ে লিয়নকে নিয়ে সিনাবহ এলাকায় পৌঁছলে ওত পেতে থাকা লিয়ন বাহিনী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে পালিয়ে যাওয়ার সময় লিয়ন গুলিবিদ্ধ হন। লিয়ন বাহিনীর বাকি সদস্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
পরে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে ডাক্তার লিয়নকে মৃত ঘোষণা করেন। লিয়নের বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি আলমগীর।
এদিকে আজ মঙ্গলবার ভোররাত ৪টার দিকে টেকনাফের মহেশখালিয়াপাড়ার নৌঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আবদুল হামিদ নিহত হন। ওই ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি পুলিশের।
পুলিশ দাবি করে, আবদুল হামিদ একজন চিহ্নিত ‘ডাকাত’ ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক, মানবপাচার ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা রয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, গতকাল ভোররাতে টেকনাফ থানা পুলিশের একটি টহল দল মহেশখালিয়া বাজার থেকে আবদুল হামিদ নামের সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করে। পরে তাঁকে টেকনাফ থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে স্থানীয় নৌঘাট এলাকায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা মজুদ করে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে নৌঘাট এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। সে সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামিদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে একপর্যায়ে ইয়াবা কারবারিরা পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চারটি এলজি, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ছয় হাজার ইয়াবাসহ হামিদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
পরে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক হামিদকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে টেকনাফ থানায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
ওসি আরো জানান, ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন এসআই স্বপন চন্দ্র দাশ, এএসআই কাজী সাইফ উদ্দিন ও কনস্টেবল রয়েল বড়ুয়া। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।
নিহত আবদুল হামিদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা কারবারীদের মধ্যে একজন বলে পুলিশ জানিয়েছে।