মাকে হত্যা করে মেয়েকে ধর্ষণ, আদালতে জবানবন্দি
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় মাকে হত্যা করে মেয়েকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন নওগাঁ সরকারি কলেজের ছাত্র সামিউল ইসলাম সাগর। আজ বুধবার বিকেল ৬টার দিকে নওগাঁর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ২-এর বিচারিক সিরাজুল ইসলাম ১৬৪ ধারায় আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
এই তথ্য নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যেসব তথ্য দিয়েছেন তা মামলা তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি পুলিশের কাছে হত্যা ও ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছেন। তাই আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। জবানবন্দি শেষে সামিউল ইসলাম সাগরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে মান্দা থানাহাজত থেকে আসামি সাগরকে আজ দুপুর ১টার দিকে কড়া পাহাড়ায় আদালতে নেওয়া হয়।
ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, মঙ্গলবার সাগরকে আটক করে পুলিশ। রাতে তার বিরুদ্ধে মান্দা থানায় হত্যা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়। নিহত গৃহবধূ নাছিমা আক্তার সাথীর স্বামী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সাগরকে আটকের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাগর নিজে গৃহবধূ নাসিমা আক্তার সাথীকে হত্যা ও সাথীর মেয়েকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেন। গৃহবধূর মেয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এদিকে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পরে তাঁর ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া ওই তরুণী নওগাঁর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৪-এর কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। বিচারক বিকাশ চন্দ্র বর্ণনাগুলো রেকর্ড করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে তাঁকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে, নাসিমা আক্তার সাথীকে হত্যা ও তাঁর মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে ফাঁসির দাবি করেছেন স্বজনরা।
গত সোমবার গভীর রাতে মান্দার গ্রামের বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূ নাছিমা আক্তার সাথীকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন সাগর। এরপর সাথীর মেয়েকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকালে তাকে আটক করে।
আসামি সাগরের বাড়ি মান্দা উপজেলার কুশুম্বা ইউনিয়নের চকশ্যামরা গ্রামে। তিনি নওগাঁ সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগে স্নাতক (সম্মান) অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।