বঙ্গবন্ধু ‘জয় পাকিস্তান’ বলেননি, ৫ বছর পর ক্ষমা চাইলেন এ কে খন্দকার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণের শেষে ‘জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান’ বলেছিলেন। ‘১৯৭১ ভেতরে বাইরে’ নামক বইটিতে এমন তথ্য দেওয়ার জন্য প্রায় পাঁচ বছর পর জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন মুক্তিযুদ্ধের সহঅধিনায়ক অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তম।
আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কে খন্দকার জাতির কাছে এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
প্রায় পাঁচ বছর পর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্ত্রীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কে খন্দকার বলেন, ‘এই অসত্য তথ্যের দায়ভার আমার। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে কখনোই ‘‘জয় পাকিস্তান’’ শব্দ দুটি বলেননি। আমি তাই আমার বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠার উল্লেখিত বিশেষ অংশ সম্বলিত পুরো অনুচ্ছেদটুকু প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’
মুক্তিযুদ্ধের সহঅধিনায়ক অবসরপ্রাপ্ত এয়ারভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তম তাঁর লেখা ‘১৯৭১ ভেতরে বাইরে’ বইটির ৩২ নম্বর পৃষ্ঠার লাল দাগ দেওয়া অংশ সম্বলিত পুরো অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে নেন। ছবি : ফোকাস বাংলা
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার আরো বলেন, ‘একই সাথে আমি জাতির কাছে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার ক্ষমা চাচ্ছি। গোধুলী বেলায় দাঁড়িয়ে পড়া সূর্যের মতো আমি আজ বিবেকের তাড়নায় দহন হয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মার কাছে, জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থী। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আশা করি, প্রথম প্রকাশই আমার বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠার বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে পুনঃমুদ্রণ করুন।’
বয়সের কারণে এ কে খন্দকারের শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তাঁর স্ত্রী ফরিদা খন্দকার। কথা বলার শুরুতেই ফরিদা খন্দকার তাঁর স্বামী এ কে খন্দকারেরের কাছে জানতে চান, ‘সেদিন আমাদেরকে যারা সংশোধন করতে দিল না, তাদের নাম কি আমি বলব? তখন এ কে খন্দকারের জবাব দেন, ‘বলুন।’
যারা সংশোধন করতে দেননি তাদের বরাত দিয়ে ফরিদা খন্দকার বলেন, ‘আমাকে শুধু বলা হলো, গুলি ছেড়ে দিয়েছ, এখন কি গুলির পিছে দৌঁড়াবা?’
ফরিদা খন্দকার বলেন, ‘বেশ কিছু লোক এসেছিল। কয়েকদিন ধরে তারা আমাকে বাহানা দিয়ে রেখেছিল। যেন এটা সংশোধন করা না হয়।’
মুক্তিযুদ্ধের সহঅধিনায়ক অবসরপ্রাপ্ত এয়ারভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তমের লেখা ‘১৯৭১ ভেতরে বাইরে’ বইটি প্রথমা প্রকাশন ২০১৪ সালের আগস্টে প্রকাশ করে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ শেষ করেছিলেন ‘জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান’ বলে। বইটিতে এমন তথ্য প্রকাশ হওয়ার পরপরই এ নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।