সেফুদার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
অস্ট্রিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন এক আইনজীবী।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামস জগলুল হোসেন বাদী মো. আলীম আল রাজীর (জীবন) জবানবন্দি গ্রহণ করে তা তদন্ত করতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন। এবং সেই তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১৫ মে দাখিল করতে বলেছেন।
মামলার আরজি থেকে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল বাদী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) দেখতে পান, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা প্রবাসী সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে পবিত্র আল কোরআন সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের আজেবাজে কথা বলেছেন এবং আল কোরআনকে অবমাননা করছেন। এতে তিনি সমগ্র ইসলামি বিশ্বকে মারাত্মকভাবে আহত করেছেন। লাইভটি ভাইরাল হওয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
আরজিতে আরো বলা হয়, আসামি সেফুদা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় লাইভে এসে কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল, আক্রমণাত্মক ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও কটূক্তি করেছেন।
এ মামলায় আসামি সেফুদার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধসহ তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে সেফাত উল্লাহ পবিত্র কোরআন শরিফ নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেন। এ সময় পবিত্র কোরআনের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পরে গত শুক্রবার বেলা ১১টায় ফেসবুক লাইভে এসে সেফাত উল্লাহ বলেন, ‘এটি কোরআন শরিফ ছিল না। এটি একটি বই। এক কবি উপহার হিসেবে আমাকে দিয়েছিল।’
পারিবারিক জীবনে সেফাত উল্লাহর এক সন্তান রয়েছে। তিনিও অস্ট্রিয়ায় থাকেন। তবে সেফাত উল্লাহর স্ত্রী ঢাকায় থাকেন। প্রায় ২২ বছর আগে সেফাত উল্লাহ অস্ট্রিয়ায় পাড়ি জমান।
সেফাত উল্লাহর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চেড়িয়ারা গ্রামে। ২৫ বছর আগে সেফাত উল্লাহর বাবা তাকে ত্যাজ্য করেছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
সেফাত উল্লাহ সেফুর বড় ভাই শামছুল আলম মজুমদার জানিয়েছেন, ‘কিশোর বয়সে সেফাতকে আমার বাবা পাবনার পাগলা গারদে দিয়ে আসেন। সেখানে কয়েক মাস তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সে মাঝেমধ্যে বাড়িতে ফোন করে। ফোন করেই আমাদের গালিগালাজ করে।’
সেফাত উল্লাহর বাবা মৃত হাজি আলী আকবর তিনজনকে বিয়ে করেন। ফলে সবঘর মিলে সেফাত উল্লাহর ভাইবোন ১৫ জনেরও বেশি। সেফাতের আপন ভাইবোন আটজন। তবে কারো সঙ্গেই সুসসম্পর্ক নেই তার।
সেফাত উল্লাহর চাচাতো ভাই রেদোয়ান হোসেন সেন্টুর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই সেফাত পরিবারের অবাধ্য হয়ে চলত। পরিবারের কাছে জেনেছি, তাকে একবার পাগলা গারদ ও জেলখানায় রাখা হয়েছিল। তার বাবা হাজি আলী আকবর তাকে কোনো সম্পত্তি দেননি। ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা দিয়েছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার সময় দেশে আসেনি সে। পরিবারের কারো সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই।’