হতাশ নয়, বিএনপি নেতাকর্মীরা হতভম্ব : ড. মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, হতাশ নয়, বরং ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিএনপির সাবেক মহাসচিবের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভায় ড. খন্দকার মোশাররফ এ কথা বলেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, যেভাবে আগের রাতে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা হতবাক। এটাকে হতাশ বলা যাবে না। বিএনপির সামনে আবারও দায়িত্ব এসেছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের, এমন দায়িত্ব জনগণকে নিয়ে বিএনপি পালন করবে বলে মত দেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এমন ভোট ডাকাতির ঘটনা এর আগে কখনো বাংলাদেশে ঘটে নাই, এটা অবিশ্বাস্য। সেই জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা হতভম্ব। আর এই হতভম্ব কাটানোর প্রক্রিয়া কিন্তু আমাদের চলছে। আমাদের সাংগঠনিক যে গ্যাপ আছে তা পূরণ করার প্রক্রিয়া চলছে। আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্র হত্যা করেছে সেই গণতন্ত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল পুনরুদ্ধার করবে।
ড. মোশাররফ বলেন, আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট কী? সবকিছু অস্বাভাবিক। ৩০ তারিখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৯ তারিখ রাতে জনগণের ভোট ডাকাতি হয়ে গেছে। এটা কী বাংলাদেশের অতীতে কখনো ঘটেছিল? এটাও একটা অস্বাভাবিক ঘটনা। তারপর বাংলাদেশ আরেকটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটল, শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। দলের সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে, জুনিয়রদের নিয়ে একটা মন্ত্রিসভা করলেন। তখন সবাই বলল, এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আরেকটি অস্বাভাবিক ঘটনা হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে, যা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। দেশের সব আন্দোলন, সব সংগ্রামের সূতিকাগার এই ডাকসু। ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, এরশাদ বিরোধী স্বৈরাচারী আন্দোলনে যেই ডাকসুতে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা অকল্পনীয়। এটা কী? এটা স্বাভাবিক না, অস্বাভাবিক।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, খুব দ্রুতই বাংলাদেশে একটার পর একটা অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তাই আমি মনে করি, অস্বাভাবিক কিছু দিয়ে যেটা শুরু, তার পরবর্তীকালে সব কিছুই অস্বাভাবিক ঘটতে থাকবে। আর অস্বাভাবিক বিষয় বেশিদিন টিকতে পারবে না, পারে না।
এ সময় খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্মারণ করে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৪০৬ দিন হলো কারাগারে। যদি খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন জীবিত থাকতেন তাহলে তিনি দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য তার যত ধরনের অভিজ্ঞতা, তার যত ধরনের সাহসিকতা এবং আন্তরিকতা তা দিয়ে তিনি আন্দোলন করতেন, মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতেন।
স্মরণসভায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের উচিত তৃণমূলে গিয়ে কাজ করা এবং দলকে উজ্জীবিত করা।
প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের আপসহীন নেতৃত্ব অনুসরণ করে বিএনপিকে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে বলে মত দেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
এতে আরো বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, জিয়া নাগরিক ফোরামের (জিনাফ) সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।