জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রধানমন্ত্রীর আপ্রাণ চেষ্টার অঙ্গীকার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নির্বাচনে ভোট দিয়ে তাঁদের বিজয়ী করেছেন, তাঁদের সেই প্রত্যাশা পূরণে তিনি সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশটা আমাদের, কাজেই এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার।’
বাংলাদেশকে মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করণীয়, তার সবই তাঁর সরকার করবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেন্ট রেগিজ হোটেলে আরব আমিরাতের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে সেখানে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রদত্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁকে পুনর্নির্বাচিত করায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই দেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রবাসীকল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, জায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাবিবুল হক খন্দকার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ইফতেখার ইসলাম বকুল অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
আরব আমিরাতে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি শাখার নেত্রী জাকিয়া হাসনাত ইমরান, প্রবাসী বাংলাদেশি নেতা, জনতা ব্যাংক আরব আমিরাত শাখার কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বিমান এবং সেখানকার দুটি বাংলাদেশের বিদ্যালয়, আরব আমিরাতে বসবাসকারী বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক নেতারা অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বিগত নির্বাচনে তরুণ প্রজন্ম এবং দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জনগণ বিপুলভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট প্রদান করে, কারণ তারা জানে যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই কেবল দেশের উন্নয়ন হয়।
আরব আমিরাতের আইনকানুন মেনে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সেখানে বিভিন্ন অপরাধে সাজাভোগকারী প্রায় ৭০০ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাঁদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশের স্বার্থে প্রচলিত ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে দেশে পাঠানোর অনুরোধ করেন।
তাঁদের কষ্টার্জিত আয়ের প্রতিটি পয়সা যথাযথ ব্যবহারের বিষয়ে প্রবাসীদের আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের দেশব্যাপী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সারা দেশে গড়ে তোলা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর এবারের আরব আমিরাত সফরকে অত্যন্ত সফল আখ্যায়িত করে বলেন, ‘জাতির পিতার ১৯৭৪ সালে এ দেশ সফরের সময়ই আরব অমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের গোড়াপত্তন হয়।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকার এবং একই সঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
প্রবাসীদের কল্যাণে তাঁর সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে আগের মতো ভিটেমাটি বিক্রি না করেও বিদেশগামী জনগণ এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত এক নৈশভোজেও তিনি অংশগ্রহণ করেন।