দুই হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুটি মামলা
পাবনার আতাইকুলায় গরু চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর পিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। আজ শনিবার ভোর ৪টার দিকে আতাইকুলা থানাধীন সড়াডাঙ্গি তাজিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত তিনজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন আবদুল বারেক নামের এক পুলিশ কনস্টেবল।
নিহত দুজন হলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের বেলতা প্রামাণিকের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩২) ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার রহিদুল ইসলাম (৩৫)।
আহত ব্যক্তিরা হলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দপুর গ্রামের ইয়ারুল ইসলাম (৩০), দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ফরমান আলী ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ছলিমপুর গ্রামের বাবলু হোসেন (৩২)। আহত পুলিশ সদস্য আবদুল বারেক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ঘটনায় তাজিয়াপাড়া, সড়াডাঙ্গি ও আশপাশের ছয় গ্রামের অজ্ঞাতনামা দুই হাজার মানুষকে আসামি করে আতাইকুলা থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-এ-আলম জানান, ভোর ৪টার দিকে সংঘবদ্ধ একটি গরু চোরের দল আতাইকুলার সড়াডাঙ্গি তাজিয়াপাড়া গ্রামের আবদুস সুবহান, আজিজ সরদার, ছকির উদ্দিনের বাড়িতে গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করতে থাকে। বিষয়টি বাড়ির লোকজন টের পেয়ে দ্রুত সড়াডাঙ্গি, গঙ্গারামপুর ও কাছারপুর মসজিদের মাইকে প্রচার করলে এলাকাবাসী লাঠিসোটা, দা, কুড়াল ও বঁটি নিয়ে এগিয়ে আসে। এ সময় সংঘবদ্ধ চোরের দল অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সড়াডাঙ্গি মহাসড়কসংলগ্ন জোলার বাগানের কাছে তিনজনকে ধরে পিটুনি দেয় গ্রামবাসী। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে আহত ইয়ারুল ও পরে একটি ধানক্ষেতে পালিয়ে থাকা ফরমান ও বাবুলকে আহত অবস্থায় আটক করে পুলিশ।
খবর পেয়ে পুলিশ সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ কনস্টেবল আবদুল বারেক মাথায় আঘাত পান। পরে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় পাবনা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ওই এলাকায় মাঝেমধ্যেই গরু চুরি হচ্ছিল। একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল এ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরের দল শনিবার ভোরে সেখানে গরু চুরি করতে গেলে গ্রামবাসীর জনরোষের শিকার হয় তারা। হতাহতরা আন্তজেলা চোরচক্রের সদস্য বলেও দাবি পুলিশের।