ডেমরায় দুই শিশু হত্যা, দুই আসামি কারাগারে
রাজধানীর ডেমরায় দুই শিশু হত্যার ঘটনায় আসামি গোলাম মোস্তফা ও তার খালাতো ভাই আজিজুল বাওয়ানিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম জসিম উদ্দিন এ আদেশ দেন।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আজ দুই আসামিকে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম জসিম উদ্দিন জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
ডেমরায় একটি বাসা থেকে গত সোমবার রাতে দুটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু দুটি সোমবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। রাত ৯টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শিশুরা হচ্ছে, ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) ও নুসরাত জাহান (৪)।
ওই দুই শিশুর মৃত্যুর ব্যাপারে আজ বুধবার সাংবাদিকদের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী জোনের উপকমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, ধর্ষণের উদ্দেশে দুই শিশুকে নিজের বাসায় নিয়ে যায় মোস্তফা। তার সঙ্গে ছিল আজিজুল।
ফারিয়া আক্তার দোলা পটুয়াখালীর দশমিনা থানার আলীপুরা গ্রামের মো. ফরিদুল ইসলামের মেয়ে ও নুসরাত জাহান ঝালকাঠি থানার বাউকান্দি গ্রামের পলাশের মেয়ে। ওই দুই শিশুর পরিবার ডেমরায় ভাড়া বাসায় থাকে।
উপকমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, ধর্ষণের উদ্দেশে লিপস্টিকের প্রলোভন দেখিয়ে ওই দুই শিশুকে তার ঘরে নিয়ে যায় আসামি মোস্তফা। এ সময় বাচ্চারা জোরে চিৎকার দিতে শুরু করে। এ সময় আজিজুল ও মোস্তফা বাচ্চাদের লিপস্টিক দিয়ে সাজাতে চায়। তারা যখন বাচ্চা দুটিকে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয়, তখন বাচ্চারা চিৎকার করতে থাকে। এ সময় মোস্তফা ও আজিজুল জোরে ক্যাসেট প্লেয়ার ছেড়ে দেয়, যেন বাচ্চাদের চিৎকার বাইরে শোনা না যায়। ধর্ষণের পরিবেশ তৈরি করে তারা। কিন্তু বাচ্চাদের যখন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না, তখন আজিজুল প্রথমে ফারিয়া আক্তার দোলাকে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর মোস্তফা গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে নুসরাত জাহানকে হত্যা করে। হত্যার পর ওই শিশু দুটির লাশ খাটের নিচে রেখে দেয় তারা। ওই ঘটনার পরই আসামি আজিজুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘরে বাচ্চাদের লাশ নিয়ে অবস্থান করছিল মোস্তফা।
ফরিদ উদ্দিন আরো বলেন, ‘এই মর্মান্তিক হত্যার পর আমরা এ ঘটনার অনুসন্ধান করতে ও আসামিদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালাই। আমাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও (ডিবি) যোগ দেয়। পরে অভিযান চালিয়ে ওই দুই আসামিকে আমরা গ্রেপ্তার করি। গতকাল রাতেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা এ ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।’
ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই বাসা থেকে আমরা ইয়াবা সেবনের আলামত, বাচ্চাদের পড়ে থাকা স্যান্ডেল, হত্যার কাজে ব্যবহৃত গামছা ও যেই ক্যাসেট প্লেয়ার বাজিয়ে ধর্ষণের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, সেই ক্যাসেট প্লেয়ার জব্দ করেছি।’