নির্মাতা আমজাদের জীবন-কর্মের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা
চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনের বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়েছে। জাতীয় শহীদ মিনারে তাঁর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে আমজাদ হোসেনের মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এই গুণী নির্মাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান মানুষ। এরপর তাঁর মরদেহ এটিএন বাংলায় এবং সেখান থেকে চ্যানেল আই ও শেষে এফডিসিতে নেওয়া হবে।
পরে বিকেলে নিজ জেলা জামালপুরে আমজাদ হোসেনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বাবার কবরেই শায়িত হওয়ার কথা রয়েছে এই গুণী চলচ্চিত্রকারের।
গত ১৪ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে ব্যাংককে মারা যান আমজাদ হোসেন।
গত ১৮ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার তাঁকে বিছানার নিচে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কখন তিনি অচেতন হয়েছেন, তা আঁচ করতে পারেননি সুরাইয়া আক্তার। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁকে ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তারপর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন আমজাদ হোসেন। চিকিৎসকরা জানান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় তাঁর। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ নভেম্বর রাত আড়াইটার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর হার্টবিট, ব্লাডপ্রেশার এবং কিডনি ইনফেকশনের জন্য ডায়ালাইসিস চলছিল বলে জানান তাঁর ছেলে সোহেল আরমান।
আমজাদ হোসেন অভিনেতা, পরিচালক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র শুরু করেন তিনি। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা শুরু করেন।
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আগুন নিয়ে খেলা’; ছবিটি পরিচালনা করেন ১৯৬৭ সালে। পরিচালক হিসেবে ‘নয়নমণি’ (১৯৭৬), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪) তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য আমজাদ হোসেন শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য আমজাদ হোসেন ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।