তারেক রহমানকে রেখেই চলছে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষাৎকার
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে লড়াই করতে ইচ্ছুক নেতাদের সাক্ষাৎকারপর্ব আজ সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। গতকালের মতো আজকেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মনোনয়ন বোর্ডে যুক্ত রয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ সকাল থেকে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে শুরু হয়েছে বরিশাল বিভাগের সাক্ষাৎকার। এরপর দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হবে খুলনা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারপর্ব। আজ পাঁচ শতাধিক প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।
গতকাল রোববার থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হয়েছে। সাক্ষাৎকারপর্বে মনোনয়ন বোর্ডে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ দিন রংপুরের ৩৩টি ও রাজশাহীর ৩৯টিসহ মোট ৭২টি সংসদীয় আসনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। এসব আসনের জন্য সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রায় ৫৩৬ জন। এর মধ্যে রংপুর বিভাগের ১৫৮ জন আর রাজশাহী বিভাগের রয়েছেন ৩৬৮ জন।
মনোনয়ন বোর্ডে তারেক রহমানের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে আওয়ামী লীগ। দণ্ডিত ও পলাতক আসামি হিসেবে তারেক রহমান নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন কি না, সে বিষয়ে গতকাল দুপুরে নির্বাচন কমিশনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
যদিও পরে এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গণমাধ্যমের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা বলেছেন, আমরা শুনেছি। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কিছুকে মনিটরিং করার নিজস্ব ক্যাপাসিটিও আমাদের নাই।’
‘যদি কেউ তথ্য-প্রমাণসহ আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন, তাহলে পরে আমরা আইনের মধ্যে থেকে যদি কিছু থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলব। আর যদি আইনের ভেতর কিছু না থাকে, তাহলে আমরা নিজেরা কমিশন বসে কী করতে পারি, সেটা পর্যালোচনা করে দেখে তার পরে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব,’ যোগ করেন রফিকুল ইসলাম।
এদিকে আজ সাক্ষাৎকার শুরুর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কার্যালয়ে বাইরে থাকা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে সমর্থকদের না নিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাতের সময় আবেদন ফরম জমাদানের রসিদ অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে। চেয়ারপারসনের কার্যালয়কে কেন্দ্র করে এর আশপাশে আমন্ত্রিত মনোনয়নপ্রত্যাশী ও আমন্ত্রিতরা ছাড়া অন্য কেউ থাকতে পারবেন না।
যদিও সাক্ষাৎকার গ্রহণকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রত্যেক প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর অনুসারী নেতাকর্মীরা বাইরের রাস্তায় ভিড় করছেন। তবে কোনো স্লোগান দিচ্ছেন না তাঁরা। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষে নেতার সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা যায় অনেককে।
অন্যদিকে এই সাক্ষাৎকারকে ঘিরে বিএনপি কার্যালয় এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। কার্যালয় এলাকায় প্রবেশের মূল রাস্তার দুই মোড়ে ডাইভারশন করে দিয়েছে। গাড়িগুলো তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছে। জনসাধারণ চলাচলও সীমিত করা হয়েছে। তবে কার্যালয়ের সামনে কোনো পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি।
অন্যদিকে সাক্ষৎকার গ্রহণকে কেন্দ্র করে সিএসএফ সদস্যরাও বেশ তৎপর। কার্যালয়ের ভেতরে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাঁকে ডাকা হচ্ছে, তাঁকে ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফটোসাংবাদিকদের বেছে বেছে প্রবেশ করানো হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং যাঁকে প্রবেশ করাতে বলছেন, শুধু তাঁকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন সিএসএফ সদস্যরা। এর বাইরে কোনো সাংবাদিক বা নেতাকর্মীও কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।
মনোনয়ন বোর্ডে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিভাগওয়ারি প্রার্থীদের সাক্ষাতের তারিখ ও সময়
আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগ ও দুপুর আড়াইটা থেকে খুলনা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে।
পরদিন ২০ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ এবং দুপুর আড়াইটা থেকে কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগ ও সিলেট বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে।
২১ নভেম্বর বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগ ও ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগ এবং দুপুর আড়াইটা থেকে ঢাকা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে।