ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি
'গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতাবিরোধী' ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিকরা। পরে তাঁরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দেশকে মিডিয়া শূন্য করার ষড়যন্ত্র। এই আইন দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্টতম আইন। এই আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকরা ঘরে ফিরে যাবে না।'
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ (ডিইউজে) এ কর্মসূচি পালন করে।
বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বিক্ষোভ মিছিলে নিয়ে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দিকে রওনা হন সাংবাদিকরা। মিছিলটি সচিবালয়ের পাঁচ নং গেটের সামনে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে নেতারা সেখানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
এ সময় সাংবাদিক নেতারা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে বয়কট করার ঘোষণা দেন এবং অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সম্প্রচার আইন বাতিলের আহ্বান জানান। নেতারা আরো বলেন, ‘বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্যই সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর করেছে। সাংবাদিক সমাজ এ আইন মানে না এবং মানবেও না।'
ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বিএফইউজের (একাংশ) মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসীন।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘সরকার গায়ের জোরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সম্প্রচার আইন বাস্তবায়ন করেছে। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং একদলীয় শাসন কায়েম করার জন্য এ আইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করলেও সরকার কোনো কর্ণপাত করছে না। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে যেখানে পাব সেখানে ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানাব এবং তাঁকে বয়কট করব। এ ছাড়া যত দিন এ আইন বাতিল না হবে তত দিন আমাদের লড়াই চলছে এবং চলবে।'
এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সম্প্রচার আইন গণমাধ্যমবিরোধী। অবিলম্বে এ আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। যত দিন এ আইন বাতিল না হবে তত দিন আমরা ঘরে ফিরে যাব না। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই এ কালাকানুন বাতিল করা হবে।'
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সভ্য দেশে একটি ঘৃণিত আইন। সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই এসব আইন বাস্তবায়ন করছে। আমরা সাংবাদিক সমাজ এ আইন মানি না, মানব না।' এ সময় তিনি মোস্তফা জব্বারের সব কর্মকাণ্ডকে বয়কট করার ঘোষণা দেন।
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্যই সরকার এসব কালো আইন কার্যকর করছে। কিন্তু সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এ আইন বাতিল করা হবে।'