বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে ইসিকে নির্দেশ
বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার একটি রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন করা কেন অবৈধ হবে না, সে বিষয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
দুপুরে বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ একটি রিটের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
কাফরুল থানার বাসিন্দা রিটকারী মোজাম্মেল হোসেন দাবি করেছেন, তিনি একজন বিএনপির সমর্থক। যদিও রিটের শুনানি করেছেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের নেতা মমতাজ আহমেদ মেহেদী। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাব্কে সাধারণ সম্পাদক। গতকাল মঙ্গলবার দায়ের করা রিটটির আজ শুনানি হয়।
মোজাম্মেল হোসেন নির্বাচন কমিশনকেও বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করার জন্য একটি আবেদন দিয়েছেন। আজ হাইকোর্ট আদেশে বিষয়টি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিব, বিএনপির চেয়ারপারসন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় বলা ছিল, দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত কেউ দলের নির্বাহী পদে থাকতে পারবেন না। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। পরে এই ৭ নম্বর ধারাটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই সংশোধনীসহ এ বছরের ২৮ জানুয়ারি বিএনপি তার গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়।
আইনজীবী মমতাজ আহমেদ মেহেদী আদালতের আদেশের পর বলেন, ওই অনুচ্ছেদে বলা ছিল, দুর্নীতিপরায়ণ কোনো ব্যক্তি বা দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। কিন্তু বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হতে পারেন। এ আশঙ্কায় তারা গঠনতন্ত্রের ৭ অনুচ্ছেদ বাতিল করে সংশোধনী আনে এবং সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। ৭ ধারা বিলুপ্ত করায় সংক্ষুব্ধ হন ‘বিএনপি সমর্থক’ মোজাম্মেল হোসেন। তাই তিনি রিট করেছেন।
বিএনপির গঠনতন্ত্রে ‘কমিটির সদস্যপদের অযোগ্যতা’ শিরোনামের ওই ৭ ধারায় বলা ছিল, ‘নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যেকোনো নির্বাহী কমিটির সদস্যপদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে ‘অযোগ্য’ বলে বিবেচিত হবেন। তাঁরা হলেন : (ক) ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি; (খ) দেউলিয়া; (গ) উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি; (ঘ) সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি।”