রাতারাতি স্থাপনা হলে ক্ষতিপূরণ নয়, মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

সরকারের অধিগ্রহণ করা জমিতে রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণ করলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না। এই বিধান রেখে একটি নতুন আইন ‘পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০১৫’-এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, ‘আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১৯৮২ সালের একটি আইন রয়েছে। এই মূল আইনের ওপর ভিত্তি করে বড় বড় প্রকল্প, যেমন—পদ্মা সেতু, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়েসহ বড় বড় প্রকল্পের জন্য পৃথক আইন করা হয়। আজ পায়রা বন্দরের জন্য এ আইন করা হলো।’
আইনের ধারাগুলো উল্লেখ করে সচিব বলেন, যখনই কোনো বড় প্রকল্পের জন্য সরকার জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়, তখন অধিক ক্ষতিপূরণের লোভে রাতারাতি খালি জায়গায় ভবন ও স্থাপনা তৈরি করা হয়। পেশাদার কিছু লোক রয়েছে, যারা প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে একটা কৃষিজমিতে নামমাত্র ভবন ও ঘর তুলে ফেলে। সরকারের টাকা লুটেরা গোষ্ঠী ভোগ করবে, তা আর হতে দেওয়া যাবে না। এর কারণে এই আইনটাতে একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। জনস্বার্থবিরোধী এ কাজকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এ আইনে। অধিগ্রহণ করা হবে এমন কোনো খালি জমি বা কৃষিজমি বা অন্য কোনো জমিতে রাতারাতি ভবন বা ঘর তুললে সে জন্য ক্ষতিপূরণ পাবেন না জমির মালিক।
সচিব আরো জানান, ক্ষতিপূরণের দাবি প্রত্যাখ্যান করার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসককে। তবে কেউ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর আপিল করতে পারবেন। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সাত দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। পাঁচ দিনের মধ্যে আপিল বোর্ড সমস্যাটি নিষ্পত্তি করবে। আপিল বোর্ডে যদি আবেদন খারিজ হয়ে যায়, তাহলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুনভাবে তৈরি করা স্থাপনা সরিয়ে জমি খালি করে দিতে হবে।
আইনটিতে আরেকটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, জমি অধিগ্রহণের আগে জেলা প্রশাসন ওই এলাকার বাস্তব চিত্র ভিডিও করবেন। ভিডিওর প্রমাণ হিসেবে আপিল ও আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে। প্রচলিত আইনে ভিডিও প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য না হলেও এ আইনে ভিডিওচিত্রকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হবে বলে জানান সচিব।
এ ছাড়া আজকের মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট আইন, ২০১৫-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সচিব বলেন, এই নামে একটি প্রকল্পের আওতায় এই ফেলোশিপ দেওয়া হতো। এখন প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে এই ফেলোশিপের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাবে। তাই একটি ট্রাস্ট করে ফেলোশিপকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ আইনের অধীনেই ট্রাস্টটি গঠন করা হবে।
এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৫-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ আইন কার্যকর হলে যাত্রীসেবার মান বাড়বে। সড়ক পরিবহন শৃঙ্খলার মধ্যে আসবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।