মায়ের একদিন পর ছেলেকেও হারালেন আশাশুনির রঞ্জিত
মা ভাগীদাসীর মৃত্যুতে ধর্মীয় নানা বিধান পালন করছিলেন ছেলে রঞ্জিত মণ্ডল। এরই মধ্যে সন্ধ্যায় তাঁর কাছে খবর এলো, ছেলে কমলেশ মণ্ডলের (২১) দেহ ঝুলছে নিজ ঘেরের বাসায়। এ খবর জানাতেই কান্না সংবরণ করতে পারলেন না সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার নড়েরাবাদ গ্রামের আইনজীবী সহকারী রঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘মায়ের শোকের পর ছেলের শোকের ভারি বোঝা আমাদের স্তব্ধ করে দিয়েছে।’
গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে কমলেশের মরদেহ থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
স্বজনরা জানান, কমলেশ মণ্ডল সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ভূগোল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। পরীক্ষার ফরম পূরণ করে কয়েক দিন ধরে বাড়িতে ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর লাশ বাড়িসংলগ্ন মাছের ঘেরের বাসার আড়ায় ঝুলতে দেখে তাঁর বাবাকে খবর দেন শ্রমিকরা।
বাবা রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘ছেলে বাড়ির কাজ খুব একটা করতে চাইত না। এ জন্য কিছুক্ষণ ধরে তাকে দেখতে না পেয়ে ভাবছিলাম, কাজ ফাঁকি দিতে পালিয়েছে সে। কিন্তু সে যে গলায় রশি ঝুলিয়ে এভাবে চিরদিনের মতো পালিয়ে যাবে, তা মনেই হয়নি।’
রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘আমার বৃদ্ধ মা ও আমার ছেলের মৃত্যুর বোঝা কিছুতেই বইতে পারছি না।’ গত মঙ্গলবার ৮৫ বছর বয়সে মারা যান তাঁর মা ভগীদাসী।
আশাশুনি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, কমলেশের দেহ আড়ায় রশি পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ঘরের মেঝে থেকে আড়ার উচ্চতা ছিল পাঁচ ফুটের সামান্য বেশি। কমলেশও প্রায় সমান উচ্চতার। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের জন্য কমলেশের দেহ পাঠানো হবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে আশাশুনি থানায়।