সংলাপের মানে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘কোনো অর্থহীন সংলাপের পক্ষে ১৪ দল নয়। অর্থহীন ফলপ্রসূহীন কোনো সংলাপের পক্ষে আমরা নই। সংলাপের মানে হচ্ছে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া, দীর্ঘায়িত করার একটি চক্রান্ত।’
আজ শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এই সংলাপের অর্থই হলো যে দেশে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যে পরিস্থিতির মাধ্যমে যেনো নির্বাচন প্রতিষ্ঠিত করা যায়, একটা অসাংবিধানিক সরকার যেনো প্রতিষ্ঠা করা যায়। এ ব্যাপারে ১৪ দল একমত নয়।’
এ সময় সংবিধান বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড ১৪ দল মেনে নেবে না জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ডিসেম্বরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। এ ছাড়া ১৪ দলের এসব দাবি জনগণের সামনে তুলে ধরতে সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখ থেকে অক্টোবরের মধ্যে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত সমাবেশ অব্যাহত থাকবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে ১৪ দল
এর আগে ধানমণ্ডির কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে তখন অশুভ একটি মহল ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মতো ওই অশুভ শক্তি আবারো নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে কোনো অবান্তর, অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক দাবি দেশের মানুষ মানবে না। কারণ তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে নির্বাচনে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।
নাসিম বলেন, সংবিধান বিরোধী কোনো কাজ কাউকে করতে দেওয়া হবে না এবং তা মেনে নেওয়া হবে না। আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করাই বিএনপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করা মন্তব্যের জবাবে নাসিম বলেন, দেশের জনগণের রায়ের মাধ্যমেই কেবল মাত্র সরকার পরিবর্তন হতে পারে। কোনো দল বা মহল সরকার পরিবর্তন করতে পারবে না।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে যেভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে তাতে দেশের মানুষ আবারো আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। সরকার বদলের বিএনপির স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা বা না করার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এখতিয়ার। তবে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল পাওয়া গেছে। কেননা ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত অনেক ভোট কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থীরাও জয়লাভ করেছে। আর ভালো জিনিস মেনে নিতে কারো তো কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নাসিম বলেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া বড় লক্ষ্য নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনই এ জোটের প্রধান লক্ষ্য।
এ সময় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ শিরিন আক্তার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাংসদ খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের আহ্বায়ক মো. রেজাউর রশিদ খান, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট কেন্দ্রের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. অসিত বরণ রায় ও গণ-আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আতাউল্লাহ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।