২১ আগস্টের হামলা, বাবরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে সাবেক এ মন্ত্রীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম। তবে আজ যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় বিচারক আগামীকাল মঙ্গলবার পুনরায় যু্ক্তি উপস্থাপনের দিন নির্ধারণ করেছেন।
সৈয়দ রেজাউর রহমানের সহকারী আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন। তিনি জানান, এ নিয়ে এ মামলায় বাবরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন ষষ্ঠ দিনের মতো চলছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
হামলায় আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ দলের ২৪ নেতাকর্মী মারা যান।
এ ছাড়া আহত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, প্রয়াত আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা পারভীন, নাসিমা ফেরদৌস, রুমা ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মী।
এই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মতিঝিল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর হয়, এএসপি আবদুর রশীদ হয়ে মুন্সী আতিকুর রহমানের কাছে যায়।
অভিযোগ উঠে, মুন্সী আতিক ও আবদুর রশীদ মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য জজ মিয়া নাটক সাজান। তাঁর কাছ থেকে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরিবারকে প্রতি মাসে টাকা দেওয়ার কথাও বলা হয়। মাঝে এফবিআই ও ইন্টারপোল মামলার তদন্ত করে। ২০০৮ সালের ১১ জুন এ মামলার প্রথম অভিযোগপত্র দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এএসপি ফজলুল কবীর। এতে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মুফতি হান্নান ছিলেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তাঁদের লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করা। এ ছাড়া ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ভূমিকা ছিল বলেও বলা হয়েছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য দায়িত্ব পান পুলিশের বিশেষ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ।
পুনর্তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ৩ জুলাই তিনি আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ওই অভিযোগপত্রে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়।
এ ছাড়া গ্রেনেড হামলার দায় স্বীকার করে ঢাকার সিএমএম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আট আসামি। তাঁরা হলেন মুফতি হান্নান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, জাহাঙ্গীর আলম, আরিফ হাসান সুমন ও রফিকুল ইসলাম সবুজ।