চিড়িয়াখানায় জনস্রোত
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন আজ। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ঢাকার চিড়িয়াখানায় ভ্রমণ পিপাসুরদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। সব বয়সী ও সব ধর্মের লোকজন আজ বৃহস্পতিবার ঈদের আনন্দ নিতে চিড়িয়াখানায় গিয়েছেন।
এদিকে রাজধানী ঢাকা ফাঁকা হলেও চিড়িয়াখানা এলাকায় তীব্র জ্যাম দেখা গেছে।
দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চিড়িয়াখানার প্রবেশমুখে দর্শনার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এ ছাড়া টিকেট কাউন্টারে টিকেটের জন্য দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক দর্শনার্থী।
চিড়িয়াখানার শাহজাহান নামের এক নিরাপত্তাকর্মী জানান, ঈদের দিন তেমন লোক না হলেও আজ অনেক লোক হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার লোকের সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে জানান তিনি।
শাহাজাহান জানান, আজ সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রবেশের জন্য ৩০ টাকা দিয়ে টিকেট খরিদ করতে হবে।
চিড়িয়াখানার ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, বানরের খাঁচার সামনে সবচেয়ে বেশি মানুষের ভিড়। সবাই বানরের খাঁচার সামনে সেলফি ও ভিডিও করছিলো। এর মধ্যে সবচেয়ে মজার ও আকর্ষনীয় ছিলো বানরের পানিতে লাফ দিয়ে গোসলের দৃশ্য।
মান্নান (৪০) নামের এক দর্শণার্থী জানান, সারা চিড়িয়াখানায় ঘুরে বানরের খাঁচার সামনে সবচেয়ে মজা লেগেছে। আমি থাকি সাভারের হেমায়েতপুরে। ঈদের ছুটিতে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছি। কিন্তু বানরদের দৃশ্য ও তাদের কাজকর্ম দেখে মনটা হাসিতে ভরে গেলো। আমার ছেলেমেয়েরাও অনেক মজা পেয়েছে।
চিতু রানী সাহা (১৫) নামের এক কিশোরী জানান, ঈদের সময় স্কুল ও বাবার অফিস ছুটি থাকায় সে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছে। তবে চিড়িয়াখানায় বেশিরভাগ পশুর খাঁচা খালি ছিলো বলে অভিযোগ চিতুর।
চিতু বলে, ‘ভারতীয় সিংহ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ভাল্লুক, জলহস্তি কোনোটাই দেখতে পারি নাই। তবে বানরের খাঁচার সামনে গিয়ে মনে হলো চিড়িয়াখানায় আসা সার্থক হয়েছে।’
ফাহিম (১০) নামের এক শিশু বলে, ‘বাঘমামা তো দেখি ঘুমিয়ে আছে। তাই মনটা খারাপ। বাঘমামাকে দেখতে চিড়িয়াখানায় এসেছিলাম। কিন্তু সে ঘুমিয়ে আছে।’
ফাহিম বলে, ‘টিভিতে বাঘমামা দেখেছি অনেক। কিন্তু আসলে (বাস্তবে) দেখবো বলে বাবা-মার সঙ্গে চিড়িয়াখানায় এসেছি। কিন্তু বাঘমামা কেমন জানি শুয়ে আছে।’
এদিকে চিড়িয়াখানায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার, আফ্রিকান সাদা সিংহ, ভারতীয় সিংহ, এশিয়ানটিক কালো ভল্লুক, ডোরাকাটা হায়েনা, চিত্রা হায়েনা, শিয়াল, বনবিড়াল, মেছো বিড়া, গ্রে হাউন্ড কুকুর, হাতি, জিরাফ, জলহস্তি, জেব্রা, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, অ্যারাবিয়ান হর্স, ওয়ান্ডি বিস্ট, ঘোড়া, কমন ইল্যান্ড, গ্রেটার কুন্ডু, গাধা, ওয়াটার বাক, ভুটানি গরু, গয়াল, রোসাস বানর, ভারবেট বানর, কুলু বানর, ওলিভ বেবুন, হামাদ্রিয়ান, সাদা হনুমান, ঘড়িয়াল, গিনিপিক, খোরগোশ, কুমিরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি চিড়িয়াখানায় রয়েছে।