গাড়ি চুরির মামলায় আ.লীগ নেতা রিমান্ডে

গাড়ি চুরির মামলায় খুলনা মহানগর ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কিসমত আলীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ শনিবার তাঁকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকার রমনা থানার পুলিশ।
ঢাকার রমনা থানায় গত ৫ সেপ্টেম্বর আবদুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে গাড়ি চুরির মামলা করেন। সেই মামলার ৭ নম্বর আসামি সৈয়দ কিসমত আলী।
খুলনা মহানগরের খান জাহান আলী এলাকায় আফিল জুট মিলের পাশে সৈয়দ কিসমত আলীর নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। ওই বাসভবনে খানজাহান আলী পুলিশ ফাঁড়িও অবস্থিত।
ওই বাড়ির আশপাশের লোকজন ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার রাতে র্যাব ২-এর একটি দল নিজ বাড়ি থেকে সৈয়দ কিসমতকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে যায়। কিসমতকে আজ শনিবার ঢাকার রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়।
তবে খান জাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল হক জানান, পুলিশের একটি দল রমনা থানায় করা গাড়ির চুরি মামলায় সৈয়দ কিসমত আলীকে রাতে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে যায়।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রমনা থানার পুলিশ আজ সৈয়দ কিসমতকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান শুনানি শেষে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জামায়াত থেকে আ.লীগে ও গাড়ি চুরি!
খান জাহান আলীর একাধিক বাসিন্দা জানান, সৈয়দ কিসমত আলী আগে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ছিলেন। ২০০৭ সালে স্থানীয় আফিল জুট মিল জামায়াত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ারের সঙ্গে দখল করে ছিলেন। সেই ঘটনায় তখন কারখানা কর্তৃপক্ষ জামায়াত নেতাসহ সৈয়দ কিসমত আলীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল। গত বছর কিসমত আলী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে খুলনার বিভিন্ন থানায় ২২টি প্রতারণার মামলা রয়েছে। খুলনার বাইরে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আছে আরো অন্তত ১২ মামলা।
এ ব্যাপারে খান জাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবিদ হোসেন জানান, কিছুদিন আগে সৈয়দ কিসমতের বাড়ি থেকে একটি চোরাই গাড়ি উদ্ধার করা হয়। ওই গাড়ি চুরির মামলায় কিসমতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবিদ হোসেন আরো জানান, সৈয়দ কিসমত আলীর গাড়ির চালক মূলত এই গাড়ি চুরির সঙ্গে জড়িত।
তবে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজ বাড়িতে পুলিশ ফাঁড়ি থাকায় সৈয়দ কিসমত বিভিন্নভাবে তাঁদের নাম ব্যবহার করেন। তাঁর বাড়ির ফটক এমনভাবে তৈরি করা যে বাসভবনে প্রবেশ করতে হলে পুলিশ ফাঁড়ির মধ্য দিয়ে তাদের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়।
সৈয়দ কিসমত আলীর মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে খানজাহান আলী থানার ওসি ফরিদুল হক বলেন, তাঁর মামলার কোনো অভাব নেই।
গাড়ি চুরির অভিযোগের ব্যাপারে সৈয়দ কিসমত আলীর স্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।