র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেওয়ার জন্যই ফেসবুক লাইভে আসেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এটা স্বীকার করেছেন।

গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে র‍্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ এ কথা জানান।

র‍্যাব পরিচালক জানান, নওশাবা ঘটনাস্থলে না থেকেই লাইভে এসে গুজব রটান। উসকানি ছড়ানোই ছিল উদ্দেশ্য।

এর আগে রাতেই নওশাবাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১-এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

এর আগে গতকাল দুপুরে আন্দোলন চলাকালীন ফেসবুক লাইভে আসেন নওশাবা। লাইভে তিনি বলতে থাকেন, ‘জিগাতলায় একজনের চোখ তুলে ফেলা ও চারজনকে মেরে ফেলা হয়েছে।’

এদিকে, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট ছড়ানোর অভিযোগে ২৯টি আইডি ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিম।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তারা যানবাহন ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশি করছে। কোনো অনিয়ম পেলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশের কাছে মামলা করার জন্য।

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত বলে জানান তিনি।

এরই মধ্যে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতারা বলেছেন, নিরাপদ বোধ না করা পর্যন্ত তাঁরা রাস্তায় বাস নামাবেন না। ফলে অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। গত শুক্রবার থেকেই আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।