চার জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত
নাটোরের লালপুর, নড়াইলের লোহাগড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সময়ে এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দুজন মাদক ব্যবসায়ী ও দুজন ডাকাত দলের সদস্য বলে র্যাব-পুলিশ দাবি করেছে।
আমাদের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
হালিম খান, নাটোর : র্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর শিবলী মোস্তফা জানান, র্যাবের একটি নিয়মিত টহল দল গতকাল মধ্যরাতে লালপুর উপজেলার বিজয়পুর এলাকায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় সেখানে কয়েকজন ব্যক্তির উপস্থিতি টের পেয়ে সেদিকে অগ্রসর হলে তারা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে অন্যরা পালিয়ে যায়। র্যাব সদস্যরা সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। ছবি : এনটিভি
মেজর শিবলী মোস্তফা জানান, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
এম মুনীর চৌধুরী, নড়াইল : গতকাল দিবাগত রাত ৩টার দিকে লোহাগড়ার কচুবাড়িয়া এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ডাকাতদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে এক ব্যক্তি নিহত হন। এ সময় একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি গুলি, দুটি ধারালো অস্ত্র ও একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
বন্দুকযুদ্ধে আহত হন লোহাগড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) প্রলয় চক্রবর্তী, কনস্টেবল মুরাদ ও টিটু। আহত পুলিশ সদস্যদের লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, কয়েকজন ডাকাত কচুবাড়িয়া এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাত ৩টার দিকে সেখানে উপস্থিত হলে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের একপর্যায়ে পুলিশ গুলিবিদ্ধ এক ডাকাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ডাকাতের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি। ছবি : এনটিভি
শহীদুল হুদা অলক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : র্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের ডেপুটি কমান্ডার এএসপি আবুল খায়ের জানান, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে র্যাবের একটি টহল দল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ-চৌডালা সড়কের মোহাম্মদপুর-ত্রিমোহনী এলাকায় পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে গোলাগুলি থেমে গেলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাব জানায়, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানাতে পারেনি র্যাব।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত আলমগীর ও র্যাব সদস্যরা। ছবি : এনটিভি
নাফিজ আশরাফ, নারায়ণগঞ্জ : আজ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আলমগীর নামের এক যুবক। আহত হন র্যাবের দুই সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে।
র্যাব-১১-এর সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, মাদকের একটি চালান আসছে এমন খবর পেয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সোনারগাঁর পিরোজপুরে চেংরাকান্দা এলাকায় আগামী ফিলিং স্টেশনের পাশে র্যাব অভিযান চালায়। টের পেয়ে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এ সময় পাল্টা গুলি চালায় র্যাব। প্রায় ১০ মিনিট দুই পক্ষের গুলিবিনিময়ের পর একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
নিহত আলমগীর কাঁচপুরের মানিক বেপারীর ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মামলা মাদকের।
আহত র্যাব সদস্যরা হলেন হাবিলদার হাবিবুর রহমান ও কনস্টেবল মিজান তালুকদার। তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।