মেঝেতে ছিল মা-মেয়ের লাশ, ঝুলছিল স্বামীর লাশ
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দরাবাদ এলাকায় মা ও মেয়ের জবাই করা এবং স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ ধারণা করছে, স্বামী তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে জবাই করে হত্যার পর নিজে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন হায়দারাবাদ এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে কামাল হোসেন (৪০), তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) এবং তাঁদের মেয়ে সানজিদা কামাল ওরফে রিমি (১৮)। সানজিদা উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। কামাল ঝুট ব্যবসায়ী। তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
নিহত কামাল হোসেনের ভাবি মাহমুদা ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কামাল হোসেনের ভাইয়ের স্ত্রী মাহমুদা বেগম তাঁর মেয়েকে স্কুলে দিয়ে ফিরছিলেন। এ সময়ে তিনি দেখতে পান কামাল হোসেনের বাড়ির বাইরের লাইট জ্বলছে। এত বেলায় কেন লাইট জ্বলছে সেটি দেখার জন্য ওই ঘরের দিকে দরজার ফাকা দিয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার শুরু করেন। এ সময়ে স্বজনরা এগিয়ে আসেন এবং বারান্দার গ্রিলের লক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা ঘরে ঢুকে মেঝেতে মা নাজমা বেগম ও মেয়ে সানজিদার জবাই করা লাশ দেখতে পান। একই ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে ছিল কামাল হোসেনের লাশ। খবর পেয়ে বিকেলে জয়দেবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বারান্দার গ্রিল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে রক্তমাখা ছোরাসহ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। ঝুট ব্যবসায়ী কামাল মাদকাসক্ত ছিলেন।
জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে বিকেলে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত কামালের লাশ ঘরের বারান্দায় আড়ার সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় ছিল। তাঁর স্ত্রী নাজমা ও মেয়ে সানজিদা আক্তার রিমির গলা ও পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রী ও মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা ও পেট কেটে এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করার পর কামাল গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে বিষয়টির সঙ্গে অন্য কোনো ঘটনা রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।