বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্যদের
পাবনার বেড়া উপজেলার জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদেরের অপসারণ দাবি করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতসাখিনী ইউপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।
তাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, উন্নয়নকাজে বাধাদান, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান আসিফ ইকবাল রোমেল। তিনি অভিযোগ করে জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদেরের রোষানল ও দুর্নীতির কবলে পড়ে তাঁর ইউনিয়নের সব উন্নয়নকাজ থমকে রয়েছে। তিনি জানান, গত অর্থবছরে জাতসাখিনী ইউনিয়নের এলজিএসপি প্রকল্পের টাকা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান তাঁর বাড়ির কাছের স্কুল মেরামতের জন্য একটি প্রকল্প করে এক লাখ টাকা নেন। কিন্তু অনেক দেন দরবারের পরও তিনি সে কাজ করেননি। কিন্তু এর দায়ভার পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদের ওপর। চলতি অর্থবছরে ওই প্রকল্প থেকে এ ইউনিয়নের বরাদ্দ করা সব টাকা স্থগিত করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, জাতসাখিনী ইউনিয়নে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ইউপি চেয়ারম্যানের দাখিল করা প্রায় ২১ লাখ টাকার সব প্রকল্প বাতিল করে উপজেলা চেয়ারম্যান তাঁর মন মতো প্রকল্প দাখিল করে অনুমোদন করেছেন। এতে অনেক ক্ষেত্রেই প্রকল্প কমিটিও বিধি মোতাবেক করা হয়নি। এসব প্রকল্পে কোনো কাজও করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। এ ছাড়া এ ইউনিয়নে গত বছর ২৭ জন দুঃস্থ প্রতিবন্ধীর ভাতার জন্য বরাদ্দ আসে। সেগুলো ইউপি চেয়ারম্যানকে বিতরণ করতে না দিয়ে নানা অনিয়ম করা হয়েছে। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যান তাঁর ছেলের নামেও ভাতার কার্ড করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চেয়ারম্যানের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে এ ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ করা প্রায় অর্ধকোটি টাকা আটকে আছে।
ইউপি সদস্যরা জানান, চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হস্তক্ষেপের জন্য তাঁরা এলাকায় কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে পারছেন না। তাঁদের এলাকার জনগণের কোনো দাবি-দাওয়া পূরণ করতে পারছেন না। এতে জনগণ থেকে তাঁরা ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। তাঁরা আরো জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের রোষানলে পড়ে তাঁরা টিআর ও কাবিখা বরাদ্দ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় ইউপি চেয়ারম্যান রোমেলসহ কয়েকজন সদস্য এর আগে লাঞ্ছিত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনিয়ম তদন্ত দাবি করে জানানো হয়, তাঁর প্রকল্পে অনিয়মের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের টাকা আটকে রাখা ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ দেওয়ার মতো। তাঁরা বলেন, তদন্তের মাধ্যমে দোষীকে শাস্তি দেওয়া উচিত। তাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদেরের অপসারণ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়াও ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম রতন, তোফাজ্জ্বল হোসেন, রওশন সেখ, রওশন মোল্লা, ফরমান আলী, মরিয়ম খাতুন, আসমা খাতুন, কালাম মণ্ডল ও আব্দুল মতিন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে আব্দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েকজন দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান অবৈধ সুবিধা না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন।