‘বিশ্বের বড় আশ্রয়শিবির’ বাংলাদেশে
আজ ২০ জুন। সারা বিশ্ব দিনটিকে ‘বিশ্ব শরণার্থী দিবস’ হিসেবে পালন করছে। বাংলাদেশেই আছে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয়শিবির’। গত বছর আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। সরকারি হিসেবে দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখেরও বেশি।
গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে গত ১০ মাসে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি ক্যাম্পে বর্তমানে আছে ১১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পই হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয়শিবির। ছয় লাখেরও বেশি লোক কুতুপালং-বালুখালী ক্যাম্প এলাকাতে বসবাস করছে। দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তার মধ্যে সাত লাখের মতো মানুষ এসেছে গত ২৫ আগস্টের পর।’
মোহাম্মদ আবুল কালাম আরো বলেন, ‘সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সাত লাখের মতো মানুষ সে গতিটা বিবেচনা করলে, বলা হচ্ছে (এ পরিস্থিতিটা) অল্প সময়ের মধ্যে গঠিত হওয়া একটা বড় সংকট হিসেবে পরিচয় পেয়েছে।’
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ক্যাম্প নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে আছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে। তবে ঠিক হয়নি দিনক্ষণ।
এ ব্যাপারে আবুল কালাম বলেন, ‘প্রত্যাবাসন নিয়ে কিছু কাজ হয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর মূল সমঝোতাটি হলো মিয়ানমারের সঙ্গে। একেবারেই যে অগ্রগতি হয়নি তা বলা যায় না। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়েছে। এরপর আরো দুটি চুক্তি হয়েছে। দুটি বৈঠক হয়েছে। এরই মধ্যে আট হাজারের অধিক লোকের একটি তালিকা আমরা তাদের কাছে দিয়েছিলাম। সে তালিকায় এক হাজার ১০০ এর মতো লোকের ব্যাপারে তারা তাদের মতামত জানিয়েছে।’
আবুল কালাম আরো বলেন, ‘তাদের (রোহিঙ্গা) মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপার, তাদের কোথায় নেওয়া হবে এ ব্যাপারগুলো নিশ্চিত না হয়ে তাদের ঠেলে দিতে পারি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি, মিয়ানমার যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে তাদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে, আশা করছি তারা তাতে সাড়া দেবে।’