পিরোজপুরে ক্লিনিক দখল : দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে রুল
পিরোজপুরের সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বিজয় কৃষ্ণ হালদারের জমি দখলের ক্ষেত্রে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বিজয় কৃষ্ণ হালদার ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা ও চলাচল নিশ্চিত করতে এবং সার্জিকেয়ার ক্লিনিকের সম্পত্তি রক্ষায় বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পিরোজপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মেয়র, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী ও নায়ক যায়েদ খানের ভাই যুবলীগ নেতা ওবায়দুল হককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরাত জাহান।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘রিট মামলার শুনানিতে জমি দখলের ঘটনায় আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন চেয়ে আদালতের কাছে নির্দেশনা চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত রুল জারি করেছেন।’
আদালত বলেছেন, ‘বিবাদীদের জবাব দিতে রুল জারি করছি। এরপর তারা এসে রুলের জবাব দেবে। সে ক্ষেত্রে শুনানি নিয়ে যদি প্রয়োজন হয়, তখন আমরা রুল তদন্তের নির্দেশ দেবো।’ আদালত আরো বলেন, ‘শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাদের শুনানির বিরোধিতা করে আদালতকে বলেছেন, এ বিষয়ে বিচারিক আদালতে মামলা করুক। কিন্তু আমরা বলেছি মামলাটি বেঁচে থাকার অধিকার, বসবাসের অধিকার প্রশ্নে করা হয়েছে।’ এরপর আদালত উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে বিবাদীদের জবাব দিতে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
এর আগে গত ২৭ মে পিরোজপুরের সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বিজয় কৃষ্ণ হালদারের জমি দখল নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ২৮ মে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফল বাংলাদেশের (এইআরপিবি) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ হালদার তার ক্লিনিকের অর্ধেক শেয়ার ওবায়দুল হকের কাছে বিক্রি করেন। এর পরপরই ২০১৫ সালের অক্টোবরে রহস্যজনকভাবে অপহৃত হন বিজয় কৃষ্ণ। আহত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে। এরপর তিনি মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তাকে এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই ক্লিনিকসহ পুরো বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেন ওবায়দুল হক। শুধু পঞ্চমতলায় বিজয় কৃষ্ণের পরিবার থাকতেন। চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ হালদার ও তার পরিবার নিরাপত্তার অভাবে বর্তমানে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।