নওগাঁয় শিক্ষক নিয়োগে উত্তর সরবরাহ, গ্রেপ্তার ১০
নওগাঁয় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর সরবরাহ চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়। বাইপাস সড়কের নিকটস্থ শহরের কোমাইগাড়ি মহল্লার তাজুল ইসলামের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ডিভাইসগুলো উদ্ধার করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন আজ শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাঁর মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল আকতার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারজানা হোসেনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁয় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর সরবরাহ চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি : এনটিভি
পুলিশ সুপারের দেওয়া তথ্য মতে জানা গেছে, ২০১৪ সালে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আজ শনিবার অনুষ্ঠিতব্য নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনার তথ্য পুলিশের কাছে ছিল। সেভাবে পুলিশ প্রস্তুতও ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাশিদুল হকের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের পৃথক টিম কোমাইগাড়ী মহল্লার তাজুল ইসলামের বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসগুলো উদ্ধার করে। অভিযানের খবর টের পেয়ে পালিয়ে যায় বাড়ির লোকজন।
পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন জানান, এই চক্র পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী সেজে প্রবেশ করে প্রশ্নপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাজুলের ঘরে বসে উত্তরগুলো অর্থের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠানো হতো। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীরা কানে অতি ছোট এক ধরনের ওয়্যারলেস যন্ত্র ব্যবহার করেন এবং পকেটে ব্লু টুথের মতো এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করেন। তাজুলের ঘর থেকে একযোগে পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহ করা হচ্ছিল। পরে এসব ডিভাইসের সূত্র ধরে শহরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়।
নওগাঁয় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর সরবরাহ চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি : এনটিভি
আটক ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার তিলকপুর গ্রামের তহমিনা আকতার (২৭) ও ধোপাইকুড়ি গ্রামের আতিয়া সুলতানা বীথি (২৬), পত্নীতলা উপজেলার সিধাতৈল গ্রামের সুইট পারভীন (২৬), চক শ্রীপুর গ্রামের নেশারুল হক (৩২) ও বনগ্রামের মিলন হোসেন (৩৫), ধামইরহাট উপজেলার দক্ষিণ শ্যামপুর গ্রামের মোরশেদুল আলম (৪৫), বর্জেগঞ্জ গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন (২৭), মহাদেবপুর উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন (৩৫) ও ভীমপুর গ্রামের মামুনুর রশিদ (৩২) এবং নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ মহল্লার মুক্তা আকতার (২৫)।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।