বেসিক ব্যাংক মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের ডেকেছেন আদালত
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আলোচিত বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দায়ের করা ৫৬টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার কয়েকটি মামলার আসামিদের জামিন আবেদন শুনানিকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এ মামলায় দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আদেশের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বেসিক ব্যাংকের অন্তত ৫৬ মামলা করেছিল দুদক। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় আসামি ফজলুস সোবহান, শিপার আহমেদসহ কয়েকজনের জামিন শুনানি ছিল। শুনানিতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবালসহ সব মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আইনজীবী আরও বলেন, ‘আইন অনুযায়ী, ১৮০ দিনের মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করার কথা থাকলেও মামলা দায়েরের পর আড়াই বছরেও তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। আগামী বুধবার (৩০ মে) তদন্তে এই বিলম্বের বিষয়ে সব মামলার নথি নিয়ে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।’
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ২০১৫ সালের ২১-২৩ সেপ্টেম্বর ১৫৬ জনকে আসামি করে মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় ৫৬টি মামলা করে দুদক।
এসব মামলায় ১৫৬ জন আসামির মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে ৪৮টি, ডিএমডি ফজলুল সোবহানকে ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থকে ২৩টি এবং ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করে দুদক। কিন্তু ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু বা পরিচালনা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি। এ কারণে আদালত ওই ৫৬ মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনসহ সব মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ উঠে।
এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে তদন্তে নামে দুদক। প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর গুলশান, পল্টন ও মতিঝিল থানায় ৫৬টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় মোট দুই হাজার ৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় ১৫৬ জন আসামির বিরুদ্ধে।
আসামিদের মধ্যে ২৬ জন ওই ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন; বাকিরা ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক জরিপ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। এসব মামলার আসামির তালিকায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু বা ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের কেউ না থাকায় দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।