রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত বিভাগে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি চার মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় সিলেকশন বোর্ড কর্তৃক মনোনীত শিক্ষকদের নিয়োগের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
আজ সোমবার এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শিক্ষা সচিব, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ চারজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি মনোনীতদের নিয়োগ না দিয়ে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এস এম মনিরুজ্জামান।
পরে অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম সাংবাদিকদের জানান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি বিভাগে এক বছর আগে শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার নেওয়া হলেও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি ওই বিভাগগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মনজুর আরিফসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
আইনজীবী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের বিধান অনুযায়ী বাছাই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে নিয়োগ দেবে। বাছাই বোর্ডের সুপারিশের সঙ্গে সিন্ডিকেট একমত না হলে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের (রাষ্ট্রপতি) কাছে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এমন না করে নতুন করে আবার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে যা আইন বহির্ভূত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী পুনরায় বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ সিন্ডিকেটকেও জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন সিন্ডিকেটের এক সদস্য।
গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সমাজবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতাসহ ১৫টি বিভাগে ২৫ জন প্রভাষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।
গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সাবেক উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবী ১৫ বিভাগের মধ্যে সাতটি বিভাগের সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া শেষ করেন। বিভাগগুলো হলো-বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করা হয়নি-এ অভিযোগ করে উচ্চ আদালতে রিট করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক উপাচার্য বাকি আট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার নেননি। গত বছরের ৫ মে উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ওই বছরের ১৪ জুন নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন। তাঁর যোগদানের পর তাবিউর রহমান গত বছরের ৭ আগস্ট রিটটি প্রত্যাহার করে নেন।
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ওই সাত বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, আগে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই।