লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা পক্ষগুলোর সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে।
মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ৬০০ মামলা বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) হয়েছে এবং বিরোধে প্রায় তিন কোটি ৫৩ লাখ টাকা আদায় হয়েছে বলে বাসসকে জানান জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সহকারী পরিচালক ও সিনিয়র সহকারী জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব।
কাজী ইয়াসিন হাবিব জানান, বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিস্পত্তির ফলে আদালতে মামলা জট হ্রাসে সহায়ক হচ্ছে। পক্ষগুলো তথা বিচারপ্রার্থী মানুষও উপকৃত হচ্ছে। লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিস্পত্তি শুরুর পর পক্ষগুলো এখন মামলা নিষ্পত্তিতে আগ্রহী হচ্ছে। দিনে দিনে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিস্পত্তির জন্য লিগ্যাল এইড অফিসে বিচারপ্রার্থীদের ভিড় বাড়ছে।
কাজী ইয়াসিন আরো জানান, সরকারি সহায়তায় স্থাপিত লিগ্যাল এইডের জাতীয় হেল্প লাইনের মাধ্যমে প্রায় ২৬ হাজার লোক বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়েছে। ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ‘টোল ফ্রি হেল্প লাইন-১৬৪৩০’ উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর থেকে দেশের মানুষ এ হেল্প লাইনের সহায়তায় আইনি সুযোগ গ্রহণ করছেন। টোল ফ্রি হেল্প লাইনটি প্রতিষ্ঠার পর মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৮৮৭ জন আইনি সহায়তা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে নারী সাত হাজার ৮৮৫ জন এবং পুরুষ ১৮ হাজার তিনজন। প্রতিদিনই মানুষ এ সেবা গ্রহণ করছেন।
দেশের দরিদ্র ও অসামর্থ জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনি সেবা নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০০ সালে আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কারা আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়। দেশের কটি জেলা আদালত, চৌকি আদালত এবং সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু রয়েছে।
ইয়াসিন হাবিব জানান, গত ২৮ এপ্রিল দেশে ষষ্ঠবারের মতো ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- ‘উন্নয়ন আর আইনের শাসনে এগিয়ে চলছে দেশ/ লিগ্যাল এইডের সুফল পাচ্ছে সারা বাংলাদেশ।’ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপি পালিত হয়। দরিদ্র, নিঃস্ব ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন হয়।
ইয়াসিন হাবিব জানান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগ হচ্ছে। লিগ্যাল এইডের সুফল পৌঁছে দিতে এর কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে।