‘জামিন পেলেও খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হবে’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তাঁকে রাজনৈতিকভাবে আবারও কারাগারে রাখা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
আগামীকাল মঙ্গলবার এই জামিন শুনানির দিন রয়েছে।
আজ (সোমবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশনেত্রী মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, আগামীকাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির দিন ঠিক আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে, খালেদা জিয়াকে আপিল বিভাগে আর আটকে রাখা সম্ভব হবে না। সুতরাং, আগামীকাল আপিল বিভাগের রায়ে আমাদের নেত্রী জামিন পাবেন। কিন্তু সরকারের যে নীল-নকশা, খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তাঁকে সরকার মুক্ত হতে দিতে চায় না। তাঁকে মুক্তি দিবে না বলে আমাদের একটা শঙ্কা আছে!
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার পরও তাঁকে মুক্তি না দেওয়ার জন্য সরকার নানা অজুহাত সৃষ্টি করবে। তাই আদালতের ওপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা যাবে না। কারণ, এই সাজাটা কোনো আইনের কাঠামো বা আইনের নিয়মের মধ্যে হয়নি। যে অভিযোগে সাজা হয়েছে, তার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শাস্তি হয় কীভাবে?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, বিচারবিভাগ যদি স্বাধীন হতো এবং আইন যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ হতো তাহলে খালেদা জিয়ার শাস্তি হয় না। অতত্রব খালেদা জিয়ার সাজা রাজনৈতিক। আর এখন পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে তাঁকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আর কাল যদি জামিন হয় তাহলেও রাজনৈতিকভাবেই তাঁকে কারাগারে রাখা হবে। তাই সামনে মুক্তির যদি প্রশ্ন উঠে, তাহলে শুধু আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। এটা রাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিকভাবেই আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। আর রাজনৈতিকভাবে মুক্ত করতে হলে আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নেই।
আন্দোলন, সংগ্রাম, গণঅভ্যুত্থান ও গণজাগরণ কোনো নোটিশ দিয়ে হবে না বলেও সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যেমন হঠাৎ করে হয়েছে। এটা তাদের যৌক্তিক দাবি। আজকেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার জনগণের কাছে যৌক্তিক দাবি। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভোটাধিকার জনগণের যৌক্তিক দাবি। এই যৌক্তিক দাবিতে জনগণ একদিন জাগবে। সেই জাগরণ কোনো সময়, তারিখ ও নোটিশ দিয়ে হবে না।
বিএনপি প্রার্থীর আপিলের মুখে ২৬ জুন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে ইসি বাধ্য হয়েছে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এবার গাজীপুরে যে গণজোয়ার উঠেছিল, সেই গণজোয়ার থামবে না। এই গণজোয়ার আরো তীব্রতর হবে।
আগামীকাল খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির এজেন্ডদের ও ভোটাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। যার ফলে খুলনা নগরী ভয়ের নগরীতে পরিণত হয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে আগামীকাল ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি আসাদুজ্জামান নেছারের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহান প্রমুখ বক্তব্য দেন।