ফরিদপুরে ঢাকঢোল পিটিয়ে দুই গাছের বিয়ে!
রাস্তার ধারেই ছিল একটি বটগাছ। আর তার পাশেই বড় হচ্ছিল আরেকটি পাকুড়গাছ। এই গাছ দুটির মধ্যে দিনে দিনে গড়ে ওঠে সখ্যতা। গাছ দুটির একটি ডাল আরেকটির ডালের মধ্যে গেঁথে যায়। আর এভাবেই একাকার হয়ে যায় গাছ দুটি।
এদের এই দুই গাছের চাওয়াকে এক করে দেওয়ার চিন্তা করেন এক গ্রামবাসী। এরপর ঢাকঢোল পিটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুই গাছের বিয়ের ব্যবস্থা করেন।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের কামারডাঙ্গী গ্রামে এই বিয়ে হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীর রীতি অনুসারে এই বিয়ে দেওয়া হয়। রাজধানীর পুরোহিত বনদেব চন্দ্র চক্রবর্তী ও হরিদাস চক্রবর্তী এ বৃক্ষ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
এ বিয়ের বর বটগাছের অভিভাবক ছিলেন কামারডাঙ্গী গ্রামের সুরেশ চন্দ্র মণ্ডল (৬০)। অন্যদিকে কনে পাকুড় গাছের অভিভাবক ছিলেন বিকাশ চন্দ্র চক্রবর্তী (৫২)।
এই বিয়ে উপলক্ষে গাছ দুটিকে বর ও কনে সাজে সাজানো হয়। এ ছাড়া গাছ দুটির আশপাশে পুরো বিয়ে বাড়ির মতো সাজানো হয়। এই বিয়েতে আসা অতিথিদের জন্য চেয়ার দেওয়া হয়। পরিবেশন করা হয় খাবার-দাবারও।
বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। এ সময় শত শত উৎসুক অতিথি বৃক্ষ বিয়ে আনন্দে মেতেছিল।
সুরেশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘হিন্দু ধর্মমতে আমরা গাছ দুটির বিয়ের ব্যবস্থা করেছি। এটি বড় পুণ্যের কাজ। বাড়ির সামনেই এই গাছ দুটিকে দীর্ঘদিন ধরে দেখছি।’
এ ব্যাপারে পুরোহিত বনদেব চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, সনাতন ধর্মীয় রীতি অনুসারে বৃক্ষ দুটির বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিয়ের ফলে গাছ দুটির মধ্যে যত পরিমাণ ফুল ও ফল রয়েছে তত পরিমাণ আত্মা স্বর্গীয় স্থান পাবে।