বিদ্যুতের দাম আরো বাড়ানো উচিত!
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরও গ্রাহক পর্যায়ে এর দাম সহনীয় আছে। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের দাম পর্যায়ক্রমে বাড়ানোর সুযোগ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তাজুল ইসলাম।
urgentPhoto
তবে সংসদের গণসংযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য উদ্যোগ নিতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের ২২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে বন্ধ ও লোকসানি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সংস্কার করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করছে কমিটি।
তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে পরিমাণ দাম (বিদ্যুৎ) বেড়েছে দামটা সহনশীল বলে বিবেচনায় আনা হয়েছে। যারা ১০০ টাকা বিদ্যুতের বিল দেন, যারা ৩০০ টাকা দেন তাহলে উনার জন্য ছয়-সাত টাকা বাড়বে। বিদ্যুতের মূল্যের এ রকম বর্ধনের জন্য ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আমরা মনে করি না। বিদ্যুতের বরং দাম পর্যায়ক্রমে বাড়ানোর সুযোগ নেওয়া উচিত।’
কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং লোকসানি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করতেই এ দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে জ্বালানি পণ্যে দাম বৃদ্ধি সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করতে বর্তমানে বিদ্যুতের যে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে তা ভোক্তাদের জন্য সহনশীল এবং জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করে কমিটি। এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জ্বালানি পণ্যের দাম অনেক কম রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা সত্ত্বেও দেশের বাজারে মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জন্য জনগণের যে দাবি আছে সে দাবির প্রতি মন্ত্রণালয় সম্মান দেখাবে বলে আশা করি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমাতে আমাদের দেশেও যে দাম কমাতে হবে এমন দাবির পক্ষে আমরাও একমত। তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে অস্থিরতা চলছে বলেই তেলের দাম কমেছে, তবে কত দিন দাম কম থাকবে সেটাও আমরা নিশ্চিত নই। এ জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবে দেখতে হবে।’
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে গ্যাস উৎপাদনের জন্য ‘বুস্টার কম্প্রেসার’ ক্রয়ে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ের অনিয়ম নিয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিটি। বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করার জন্য কমিটির সদস্য এম আবদুল লতিফকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠিত সাব-কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সুপারিশ করা হয়। কমিটি তেল, গ্যাস এবং বিদ্যুতের মূল্য পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য উদ্যোগ নিতেও মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।
এ ছাড়া বৈঠকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার সুপারিশ হয়। কমিটি ২৫ বছরের পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরনো যন্ত্রপাতি সংস্কার এবং পরিবর্তনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ কমানোরও সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দরপত্র আহ্বানেরও সুপারিশ করা হয়।