১৪৪ ধারার মধ্যে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল একজনের
১৪৪ ধারা জারি করা সত্ত্বেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। আর সেই সংঘর্ষে প্রাণ গেছে একজনের। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর বাজারের হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার সকালে ফের সংঘর্ষ হলে মান্নান সিকদার (৬০) নামের একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪০ জন। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে কৃষ্ণপুর বাজার এলাকায় সব ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে গতকাল রোববার রাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। এর আগে রোববার বিকেলে বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ওই বাজারের ৪০টি দোকান ও কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের পক্ষের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থক আকতারুজ্জামান তিতাসের অনেক দিন থেকেই বিরোধ ছিল। এত দিন হাটের ইজারা পেতেন বিল্লাল ফকির। কিন্তু এবার ইজারা পান আকতারুজ্জামান তিতাস। এই ব্যাপারে অসন্তুষ্ট ছিলেন বিল্লাল ফকির।
গতকাল রোববার হাটের দিন আকতারুজ্জামান তিতাসের লোকজন ইজারা তুলতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় অন্তত ৪০টি দোকান ও বাজার সংলগ্ন কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
পরে আজ সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হলে একজনের মৃত্যু হয়। নিহত মান্নান সিকদার আকতারুজ্জামান তিতাসের সমর্থক বলে দাবি করেছেন তিতাস ও তাঁর লোকজন।
আকতারুজ্জামান তিতাস বলেন, ‘হাট কৃষ্ণপুরের হাটের ডাক পেয়েছে আমার লোকজন। আর এই ঘটনা বিল্লাল ফকির মেনে নিতে না পেরে রোববার হাটের ইজারা তুলতে গেলে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। আবার সোমবার সকালে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে আমাদের একজন লোককে মেরে ফেলেছে। এর আগেও আমরা বিল্লাল ফকিরের ব্যাপারে সদরপুর থানায় অভিযোগ করেছি, কিন্তু পুলিশ কোনো কর্ণপাত করেনি।’
ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের সমর্থক হাট ব্যবসায়ী অবিনাশ বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে আমাদের দোকানসহ প্রায় ৪০টি দোকানে হামলা চালায় আকতারুজ্জামান তিতাসের লোকজন। হাটের ইজারার ঘটনায় আমাদের দোকানে কেন হামলা করল বুঝলাম না।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ সকাল থেকে থেমে থেমে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে। পরে ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে সদরপুর থানা ও পুলিশ লাইনের নয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন বলে জানান জামাল পাশা।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।