বাসার সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয় শহিদুলকে
আমেরিকায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ব্যবসায়ী শহিদুল আলমের (৫২) বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলা শহরের ব্যাংকপাড়ায়। গতকাল বুধবার আমেরিকার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে সন্ত্রাসীরা তাঁকে হত্যা করে।
আজ বৃহস্পতিবার এ খবর আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ফেরার পথে বাসার সামনেই শহিদুলকে হত্যা করা হয়।
শহিদুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করে ২০০৪ সালে পাড়ি জমান আমেরিকাতে। সেখানে অন্য ভাইদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন।
গোপালগঞ্জ জেলা শহরের ব্যাংকপাড়ার বাসিন্দা পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাইউম সিকদারের ছয় ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে আটজনই আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা। এক মেয়ে শুধু বাংলাদেশে থাকেন। ব্যবসা-বাণিজ্য করে আমেরিকা প্রবাসী ভাই-বোনরা ভালোই আছেন।
নিহত শহিদুল আলমের সেজ ভাই মেজর (অব.) শাহ আলম। তিনি সম্প্রতি আমেরিকা থেকে গোপালগঞ্জে এসেছেন। গোপালগঞ্জের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে হজ পালন করতে সৌদি আরব যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। এর মধ্যে তিনি ভাইয়ের হত্যার খবর পান।
গোপালগঞ্জ শহরের বাসায় রাত ৮টায় এনটিভি প্রতিনিধিকে মেজর (অব.) শাহ আলম বলেন, প্রতিদিনকার মতো বুধবারও আমেরিকার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে শহিদুল দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরছিল। তাঁর বাসার সামনেই অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। শহিদুলের সঙ্গে মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও কথা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
নিহত শহিদুল আলমের স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
মেজর (অব.) শাহ আলম আরো জানান, তাঁর ভাই ফ্লোরিডা শহরের লং উড সিটিতে থাকতেন। তিনি আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘ঠিকানা’ পত্রিকায় মাঝে মাঝে লিখতেন।
নিহত শহিদুল আলমের লাশ দেশে না এনে সেখানেই সমাধিস্থ করা হবে উল্লেখ করে শাহ আলম জানান, আমাদের ভাই-বোনসহ বেশির ভাগ আত্মীয়স্বজনই আমেরিকাতে থাকে। যে কারণে সেখানকার গোল্ডেন রড মসজিদের পাশে কবরস্থানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হবে।
এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারকেও প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান শাহ আলম।
গোপালগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নিহতের ভগ্নিপতি হাসমত আলী সিকদার চুন্নু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শহিদুলের সঙ্গে তাঁর অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। ঘটনার দিন দুপুরেও তাঁর সঙ্গে কথা হয়।
আজও শহিদুলের মোবাইল ফোনে কল দিয়েছিলেন, কিন্তু পাননি। পরে অন্য ভাইদের ফোন করে এ দুঃখজনক খবর জানতে পারেন হাসমত আলী সিকদার চুন্নু।