খালেদা জিয়ার বিচার হবে, সংসদে প্রধানমন্ত্রী
হরতাল-অবরোধে ‘মানুষ খুনের দায় খালেদা জিয়া এড়াতে পারবেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মামলা হয়েছে। আইন তার আপন গতিতে চলবে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আইনানুগভাবে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, ‘(তিনি) বীভৎস ঘটনাগুলি ঘটাচ্ছেন। উনি হুকুম দিয়েই যাচ্ছেন, হুকুম দিয়েই যাচ্ছেন। নিজের ঘরে যেতে ভুলে গেছেন। উনি বসে থেকে মানুষ পোড়াচ্ছেন, মানুষ হত্যা করছেন।’
শামীম ওসমান প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলে, যে মানুষকে ভালোবেসে রাজনীতি করেন শেখ হাসিনা, সেই ৮৫ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। উনি (শেখ হাসিনা) কি আরো ধৈর্য দেখাবেন? না কি জঙ্গিনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ আদালত করে একাত্তরের ওই পরাজিত শক্তিকে একেবারে নির্মূল করতে দেশবাসীকে আহ্বান জানাবেন?’
এই প্রশ্নের জবাবেই কথাগুলো বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এত বড় অন্যায় বরদাশত করা যায় না। উনি (খালেদা জিয়া) উঠেপড়ে লেগেছেন দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবেন। কাজেই ইনশাআল্লাহ এর বিচার হবে।’
মানুষ হত্যা বাংলাদেশের মানুষ কখনো বরদাশত করে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মামলা হয়েছে, আইন তার আপন গতিতে চলবে এবং বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার, আইন আপন গতিতে চলে, আইনানুগ ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। এবং এই খুনের দায় তিনি এড়াতে পারবেন না। এত মানুষের হাহাকার, এত মানুষের কষ্ট, এত মানুষের যন্ত্রণা বিনা বিচারে যেতে পারে না।’
কোন কোন এলাকায় কারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। যারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে তাদের শাস্তি বাংলার মাটিতে হবেই বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
ইস্যুবিহীন অবরোধ-হরতালের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব নাশকতা প্রতিরোধে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান। সেই সঙ্গে মহাসড়ক, শিল্পাঞ্চল, রেলপথসহ বিভ্ন্নি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা জোরদারের কথাও জানান তিনি।
এর আগে সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী তাঁর সম্পূরক প্রশ্নে জানতে চান, সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে পেট্রলবোমা মেরে মানুষকে পুড়িয়ে মারছে, তাদের বিচার করতে দেশের প্রচলিত আইনের বাইরে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে নতুন কোনো আইন প্রনয়ণ করা হবে কি না।
এ প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এরই মধ্যে সন্ত্রাস দমন আইন, দ্রুত বিচার আইন এবং অন্যান্য আইনের আওতায় সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। যারা এই ধরনের ঘটনায় লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে, যারা ধরা পড়েছে তাদের জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে, কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। এই মামলাগুলো দ্রুত চলার বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে সংসদে উপস্থিত আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সকল সংসদ সদস্যের প্রতি প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ জানান।