কেশবপুরে দুই ইটভাটার মালিককে জেল-জরিমানা
সরকারের নীতিমালা অমান্য করেই যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গড়ে উঠেছে ১৫টি ইটভাটা। কিছু মালিক শুধু মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতেই ভাটা চালাচ্ছেন বছরের পর বছর। এভাবেই প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর দায়ে ভাটা ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান ও মমতাজ বেগমকে ছয় মাস করে কারাদণ্ডাদেশ ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ সোমবার সকালে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানূর রহমান রোমান ব্রিকসের মালিক সিদ্দিকুর রহমান ও জামান ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী মমতাজ বেগমকে এই জরিমানা করেন।
কেশবপুরের তথাকথিত একজন সংবাদকর্মী যিনি নিজেকে ২২টি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকেন তাঁর সহযোগিতায় এ দুই ভাটামালিক অবৈধভাবে ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করেন বলে ভাটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর কেশবপুরের ইউএনও সব ইটভাটার মালিককে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্সের কাগজপত্র নিয়ে তাঁর দপ্তরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় ১৫টি ইটভাটার মধ্যে মাত্র তিনটি ভাটার মালিক তাঁদের বৈধ কাগজপত্র জমা দেন। বাকিরা এক মাসের সময় নেন। এই এক মাস সময় নেওয়ার পরও শুধু একটি ভাটা ইউএনওর দপ্তরে সব কাগজপত্র জমা দেয়। অন্য ১১টি ইটভাটা কোনো কাগজপত্র জমা দেয়নি। এই অবৈধ ইটভাটাগুলো বছরের পর বছর ইট উৎপাদন ও বিক্রি করছে।
এ ছাড়া রিপন ব্রিকসের মালিক সিদ্দিকুর রহমান বারুইহাটি মোড়ে রোমান ব্রিকস নামে, ভোগতীনরেন্দ্রপুর এলাকায় জামান ব্রিকস ও সাতবাড়িয়া বাজারের ঘন বসতিপূর্ণ এলাকার সুপার ব্রিকস নামের তিনটি ইটভাটা চলতি বছর নতুন করে চালু করা হয়।
এর মধ্যে ভাটামালিক সিদ্দিকুর রহমান আজ সোমবার সকালে বারুইহাটি মোড়ে রোমান ব্রিকসে ইট উৎপাদনের জন্যে ভাটায় আগুন দেন। খবর পেয়ে ইউএনও মো. মিজানূর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর অভিযোগে ভাটা মালিক সিদ্দিকুর রহমানকে আটক করে। পরে সিদ্দিকুর রহমানকে ছয় মাসের জেলসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে, ভোগতী মোড়ে অবৈধভাবে স্থাপিত জামান ব্রিকসে গত ১০ জানুয়ারি থেকে ইট পোড়ানো শুরু করে। খবর পেয়ে আজ জামান ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী মমতাজ বেগমকেও ছয় মাসের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে ইউএনও মিজানূর রহমান জানান , নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বৈধ কাগজপত্র জমা না দেওয়ায় রোমান ব্রিকস ও জামান ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী সিদ্দিকুর রহমান ও মমতাজ বেগমকে ইট পোড়ানোর অপরাধে তাদের প্রত্যেককেই ছয় মাস করে জেল ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি যোগ করেন।
ইটভাটার মালিকরা বিভিন্ন এলাকা থেকে জোর করে কৃষি জমির টপ সোয়েল কেটে এনে ইট তৈরির জন্যে ঢিবি করে রাখেন ভাটাগুলোতে। এ সমস্ত অবৈধ ভাটা স্থাপনের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ফুসে উঠেছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা প্রতিনিয়ত কেশবপুর শহরে অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে মিছিল ও মানববন্ধন অব্যাহত রেখেছেন।