বন্ধের ঘোষণা দিয়ে জোরে-শোরে চলছে উন্নয়ন কাজ
বান্দরবানের স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমাকে অপসারণের দাবিতে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন ঠিকাদাররা। সেই মোহন চাকমা অপসারিত হননি। ঠিকাদাররা তাঁদের আন্দোলন স্থগিতও ঘোষণা করেননি। সেই মোহন চাকমার অধীনেই বান্দরবানে উন্নয়নকাজ জোরে শোরে চালাচ্ছেন ঠিকাদার সমিতির নেতারাসহ অন্যরা।
জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তুমব্রু, দোছড়ি ও বাইশারী, লামা উপজেলার ফাইতং ও গজালিয়া এবং রুমা উপজেলার পলিকাপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, এলজিইডির অর্থায়নে প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। জোরে শোরে চলছে ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, রাস্তার সলিং ও কার্পেটিং সিল কোটের কাজ।
কাজ বন্ধে রেখে আন্দোলনের কথা মুখে বললেও ঠিকাদার সমিতির সভাপতি সাবিকুর রহমান জুয়েল, ঠিকাদার সমিতির নেতা কামাল হোসেন, নূরুল আবছারসহ নেতৃত্বদানকারী ঠিকাদারদের উন্নয়নকাজের প্রকল্পগুলো ঘুরে দেখা গেছে, উন্নয়নকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী ঠিকাদার সমিতির উপদেষ্টা মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন, ঠিকাদার কামাল হোসেন ওরফে লেস কামালের সঙ্গে আমার যৌথভাবে কিছু উন্নয়নকাজ চলছে। সেগুলো চলমান আছে নাকি বন্ধ রয়েছে সেটি আমার জানা নেই। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমার অপসারণ আন্দোলন অনেকটা ঝিমিয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে ঠিকাদার কামাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ঠিকাদার নূরুল আবছার বলেন, রুমা উপজেলার পলিকাপাড়া-চামা খাল সড়কে আমার দুটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও ঠিকাদার সমিতি থেকে সঠিক কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় উন্নয়নকাজগুলো বন্ধ রাখা হয়নি।
এলজিইডির নাইক্ষ্যংছড়ি ও থানচি উপজেলার দায়িত্বরত প্রকৌশলী তোফাজ্জেল হোসেন জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি ও থানচি উপজেলায় এলজিইডির উন্নয়নকাজগুলো চলমান রয়েছে। মুখে কাজ বন্ধ রাখার কথা বললেও উন্নয়নকাজ শেষের নির্ধারিত সময়সীমা রয়েছে। সময় মতো কাজ শেষ করতে ঠিকাদাররা শ্রমিক দিয়ে জোরে শোরে কাজ চালাচ্ছেন। কথায় আছে না, ভূতের মুখে রাম নাম।
জেলা এলজিইডির সিনিয়র প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান জানান, উন্নয়নকাজ বন্ধ রাখার কোনো সুযোগ নেই। ঠিকাদারেরা নিজের স্বার্থেই চলমান উন্নয়ন কাজগুলো শেষ করতে জোরেশোরে চেষ্টা করছেন। কোথাও কোনো উন্নয়নকাজ বন্ধ রয়েছে বলে আমার জানা নেই।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মেসার্স আকতার ট্রেডাসের লাইসেন্সের বই সংগ্রহ করতে লামা উপজেলার বাসিন্দা ঠিকাদার রফিক আহমেদ এলজিইডি জেলা অফিসে যান। নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা অফিস সহকারীর কম্পিউটার কক্ষে ঢুকে কোনো কারণ ছাড়াই ঠিকাদার রফিককে ঘুষি এবং চর-থাপ্পর মারেন। এ ঘটনায় বিক্ষোভ করে ও সংবাদ সম্মেলন করে উন্নয়নকাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন ঠিকাদার সমিতি। এ ছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণের দাবিতে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন ঠিকাদাররা।