আশরাফ ও লতিফকে ইসির চিঠি
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/09/photo-1439132518.jpg)
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠিতে বলা হয়েছে, লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৩ আগস্ট ইসিতে তাঁদের উপস্থিত থাকতে হবে।
আজ রোববার ইসির উপসচিব (আইন শাখা) সেলিম মিয়া স্বাক্ষরিত চিঠিটি আশরাফুল ইসলাম ও লতিফ সিদ্দিকীর কাছে পাঠানো হয়।
নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, ২৩ আগস্ট বেলা ১১টায় ইসি সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
এর আগে ইসি থেকে লতিফ সিদ্দিকীর সদস্য পদ নিয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়। গত ২ আগস্ট নিজ নিজ পক্ষে লিখিত বক্তব্য ইসিতে পাঠান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
ইসিতে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের কেউ নন, তাই তাঁর সংসদ সদস্য পদে থাকার কোনো আইনগত অধিকার নেই।
লিখিত বক্তব্যে লতিফ সিদ্দিকী যুক্তি দেন, ‘নিউইয়র্কে বসবাসরত টাঙ্গাইলের অধিবাসীদের সঙ্গে আলাপকালে আমার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। আলোচনার স্বার্থে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে আমি উপরোক্ত মন্তব্য দিয়েছি—তাহলেও এটি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমার সদস্যপদ বাতিল করার কোনো এখতিয়ার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্যদের নেই। কেননা আমি বাংলাদেশ সরকার তথা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে গিয়েছি এবং জনপ্রতিনিধি হিসেবে উক্ত বক্তব্য দিয়েছি বলে ধরে নেওয়া হবে।’
লতিফ সিদ্দকী লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভুল। এই বক্তব্যের আলোকে এ পর্যন্ত যতগুলো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং হবে তার সবই আইন অনুযায়ী ভুল বলে বিবেচিত হবে। উপরোক্ত আলোচনার আলোকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, মাননীয় স্পিকার ব্যতীত প্রেরিত ও উল্লেখিত সংবিধানের ৬৬(৪) দফায় বর্ণিত সারমর্মের সঙ্গে আমার বিষয়টি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ফলে মাননীয় নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে ৬৬(৪) দফায় যা বলা হয়েছে এবং কার্যক্ষেত্রে ৬৬(২) ও ৭০ দফায় কোনো ব্যত্যয় না ঘটায় কোনো কিছু করণীয় আছে বলে মনে হয় না। সে মতে নির্বাচন কমিশন সমীপে বিনীত নিবেদন, বিষয়টি এখনো ভবিষ্যতের বিবেচনায় রাখতে অনুরোধ করছি। তাই নির্বাচন কমিশনকে শুনানি বিতর্কে না জড়িয়ে চিঠিটি জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকারের বরাবর পাঠালে বাধিত হবো।’
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এরপর প্রথমে মন্ত্রিসভা থেকে এবং পরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
সে সময় দেশের বিভিন্ন আদালতে তাঁর নামে একাধিক মামলা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ভারত হয়ে ওই বছরের ২৩ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দেশে ফেরেন সাবেক এই মন্ত্রী। পরে ২৫ নভেম্বর ধানমণ্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করলে তাঁকে জেলহাজতে পাঠান আদালত। গত ২৯ জুন জামিনে মুক্তি পান লতিফ সিদ্দিকী।