মোমিন হত্যা, দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
রাজধানীর কাফরুলের কলেজছাত্র মোমিন হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সাখাওয়াত হোসেন জুয়েল ও তারেক ওরফে জিয়া।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন হাবিবুর রহমান তাজ, জাফর আহমেদ, মনির হাওলাদার, ঠোঁট উঁচা বাবু, আসিফুল হক জনি ও শরিফ উদ্দিন। এ মামলায় প্রধান আসামি ওসি রফিক মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মতিঝিল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম রফিকুল ইসলাম এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। তিনি কারাবন্দি অবস্থায় ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর মারা যান। এ কারণে মামলাটি বহুল আলোচিত। ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর খুন হন কলেজছাত্র মোমিন। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের বাবা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ওসি রফিকসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ মামলায় ওসি রফিককে আসামির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ মে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর বিরুদ্ধে বাদী নারাজি আবেদন দিলে ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব দেন আদালত। ডিবিও তদন্ত শেষে ওসি রফিককে বাদ দিয়ে ২০০৮ সালের ২ মার্চ অভিযোগপত্র দেয়। এরপর বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়। ২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর দেওয়া এ তদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওসি রফিকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ওই বছরের ১১ নভেম্বর এ অভিযোগপত্র গৃহীত হয়। এরপর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৩-এ ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৪-এ স্থানান্তর করা হয়। এ আদালতে ওসি রফিকের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয় ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি।
পরে একই আদালতেই মামলার শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২০ জুলাই রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ওসি রফিকসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান তাজসহ ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর নিম্ন আদালত থেকে ফাঁসি অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয় হাইকোর্টে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিরা আপিল করেন। এ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর ১২ নভেম্বর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।